নিউজ ডেস্ক:
রয়টার্স’র একটি প্রতিবেদন অনুসারে, বন্যপ্রাণী নিয়ে অবৈধ বাণিজ্য বন্ধ করতে সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বের আর কোনো দেশে এমন বৃহত্, বিপুল সংখ্যক হাতির দাঁত ধ্বংস করার নজির নেই। সিঙ্গাপুর সরকারে বক্তব্য, বন্যপ্রাণীদের জীবন রক্ষার পাশাপাশি তাদের নিয়ে অবৈধ বাণিজ্য বন্ধ করতেই এই সিদ্ধান্ত তাদের নিতে হয়েছে।
জানা গেছে, সবমিলিয়ে প্রায় ৩০০ আফ্রিকান হাতির দাঁত ধাপে ধাপে নষ্ট করা হবে। দুই-একদিনের মধ্যে এত দাঁত নষ্ট করে ফেলা সম্ভব নয়। এমন ভাবে হাতির দাঁতগুলিকে নষ্ট করা হবে, যাতে কোনোভাবে এর কণামাত্রও ব্যবহার না করা যায়। তাই ক্রাশারে গুঁড়িয়ে, আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হবে।
আফ্রিকা ও এশিয়ার মধ্যে নিষিদ্ধ প্রাণী সামগ্রীর চোরাচালানের ট্রানজিট পয়েন্ট হিসাবে কাজ করে সিঙ্গাপুর। গত বছর সিঙ্গাপুরে ৮.৮ টন হাতির দাঁত আটক করা হয়েছিল। যার আনুমানিক মূল্য ১৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৯৭ কোটি ২৭ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা। যে পরিমাণ হাতির দাঁত ধ্বংস করা হচ্ছে, সেগুলি ৩০০ আফ্রিকান হাতি থেকে এসেছে বলে দাবি করা হয়েছে।
অনলাইনে প্রচারিত একটি ইভেন্টে দেখা গিয়েছে, শ্রমিকেরা মাথায় হেলমেট পরে ট্রলি ও ভারী ট্রাকে একটি ক্রাশার দিয়ে হাতির দাঁতগুলো পিষ্ট করছেন। সেখান থেকে অনবরত ক্রাশার চালানোর শব্দ আসছে। দাঁতগুলি পুরো ধ্বংস করতে কয়েক দিন লেগে যেতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ক্রাশারে টুকরো টুকরো করে, হাতির মূল্যবান দাঁতগুলিকে শেষ পর্যন্ত আগুনে পোড়ানো হচ্ছে।
পরিবেশবিদদের অনুমান, দাঁত-সহ দেহের অন্যান্য অঙ্গের বাণিজ্যিক চাহিদার কারণে আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতিদিন প্রায় ১০০ হাতি মানুষের হাতে মারা পড়ছে। বিশ্বে আর মাত্র চার লাখ হাতি অবশিষ্ট রয়েছে বলে তাদের দাবি। চীন ও ভিয়েতনামের মতো কয়েকটি এশীয় দেশে হাতির দাঁতের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। অলঙ্কারে হাতির দাঁত ব্যবহারের রেওয়াজ রয়েছে। সেই জোগান মেটাতেই চোরা শিকারিরা দিনের পর দিন নির্দ্বিধায় হাতি মেরে চলেছে। যার জেরে কমে আসছে হাতির সংখ্যা।