নিউজ ডেস্ক:
দীর্ঘ চার বছর অপেক্ষার পর ২৬ অক্টোবর খুলে দেওয়া হচ্ছে মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওইদিন দুপুর ১২টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ ফ্লাইওভারের উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক সুশান্ত কুমার পাল।
তিনি বলেন, আমরা ফ্লাইওভারের সব কাজ সম্পন্ন করে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতির জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলাম। তিনি ২৬ অক্টোবর সময় দিয়েছেন। প্রকল্প এলাকার নিচের রাস্তাগুলোর কার্পেটিংও শেষ হয়ে গেছে। উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গেই যানচলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার।
ওই ফ্লাইওভারটি তিন ভাগে করা হয়েছে। একটি অংশ সাতরাস্তা-মগবাজার-হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল। গত বছরের মার্চ মাসে এ অংশ যানচলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর নিউ ইস্কাটন থেকে মৌচাক পর্যন্ত ফ্লাইওভার একদিক খুলে দেওয়া হয়। এখন খুলে দেওয়ার অপেক্ষায় আছে ফ্লাইওভারের মৌচাক-মালিবাগ-শান্তিনগর-রাজারবাগ-মগবাজার অংশ।
সরেজমিন মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের মালিবাগ অংশে গিয়ে দেখা যায়, শেষ সময়ের কাজে ব্যস্ত শ্রমিকরা। সড়কবাতি লাগানো শেষ হয়েছে পুরো ফ্লাইওভার জুড়ে। লাইটগুলো ঠিকভাবে কাজ করছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখছিলেন বেশ কয়েকজন মিলে। পোশাক পরে রাস্তা ঝাড়ু দিচ্ছিলেন লাইজু বেগম। তিনি বলেন, খুঁটির ঝালাই কাজ শেষ হওয়ায় বেশকিছু আবর্জনা তৈরি হয়েছে। সেগুলোসহ আমরা ফ্লাইওভার ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করছি। এরপর পানি দিয়ে ধোয়া হবে। রাস্তায় পিচ ঢালাইয়ের কারণে পরিষ্কার করতে অসুবিধা হচ্ছিল। রাস্তার কাজ শেষ হওয়ার পর আমাদের দ্রুত কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। ফ্লাইওভার নির্মাণের আগে তীব্র যানজট আর নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর বৃষ্টির পানি, খানাখন্দ এবং গরমের ধুলায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল রামপুরা, মালিবাগ, মৌচাক এলাকার মানুষের জীবন। অনেকের ব্যবসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। তাই ফ্লাইওভার কাজ শেষ হওয়াতে স্বস্তিতে এই এলাকার মানুষ।
ভাই ভাই ট্রেডার্সের মালিক ফাহিম আকন্দ বলেন, ফ্লাইওভার তৈরির শুরু থেকেই যানজট আরও বেড়েছে। তাই ফ্লাইওভার খুলে দিলে হয়তো এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলবে। ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট ১৯৯৯ সালে যান চলাচল ব্যবস্থা নিয়ে একটি সমীক্ষা করে। সেই সমীক্ষায় ঢাকা মহানগরীর ২০টি স্থানে ফ্লাইওভার, ইন্টারসেকশন, আন্ডারপাস, বাসস্ট্যান্ড, বাস টার্মিনাল, পার্কিং এরিয়া নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়। পরে ২০০০ সালে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে যৌথ বিনিয়োগে ফ্লাইওভার নির্মাণের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ করা হয়। সে সময় মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সব ধরনের প্রস্তুতি শেষে ২০১১ সালের ৮ মার্চ একনেক সভায় এ প্রকল্পের অনুমোদন পায়। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে কাজ শুরু করে সময়সীমা বাড়ানো হয় ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু এই সময়েও কাজ শেষ করতে না পারায় সময়সীমা বাড়িয়ে এ বছরের জুন পর্যন্ত করা হয়।
তবে বর্ধিত সীমা অতিক্রম করে অক্টোবরে গিয়ে সম্পন্ন হলো এই ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজ।