নিউজ ডেস্ক:
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ব বাণিজ্যে সক্ষমতা অর্জনে বাংলাদেশ কাজ করছে। দেশীয় শিল্পের সুরক্ষা দিয়ে বাংলাদেশ আমদানি ও রপ্তানি নীতি গ্রহণ করেছে। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ৬০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।
গত শনিবার ঢাকায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
‘বাংলাদেশ ইন রিজিওনাল ট্রেড অ্যান্ড কানেকটিভিটি : এ পলিটিকো-ইকোনমিক অ্যাসেসমেন্ট’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস)।
সিজিএসের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এম আতাউর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থনীতিবিদ এম শহিদুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন গেস্ট অব অনার প্রাক্তন মন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ। আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের প্রেসিডেন্ট আ স ম আব্দুর রব, এফবিসিসিআইর প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মীর নাসির হোসেন, এনবিআরের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আব্দুল মজিদ, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডান্ট্রিজের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আসিফ ইব্রাহীম, অ্যাম্বাসেডর আশফাকুর রহমান, বিআইআইএসএসের প্রেসিডেন্ট মুন্সী ফয়েজ আহমেদ।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ডব্লিউটিওর দেওয়া বাণিজ্য সুবিধা গ্রহণের জন্য পেপারলেস বাণিজ্যে সক্ষমতা অর্জনের প্রস্তুতি চলছে। শ্রীলঙ্কার সাথে ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট (এফটিএ) স্বাক্ষর করা হচ্ছে। ডব্লিউটিওর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, চীন ও ভারতসহ বিভিন্ন উন্নত দেশের দেওয়া বাণিজ্য সুবিধা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, বৈদেশিক বাণিজ্যের ভলিউম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ চট্টগ্রাম, মংলা বন্দরের পাশাপাশি পানগাঁও ও পায়রা সমুদ্রবন্দর চালু করেছে। রাস্তাঘাট সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। বৈদেশিক বাণিজ্য বাড়াতে হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের বিকল্প নেই। বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপাল (বিবিআইএন) এবং বাংলাদেশ, চীন, ভারত ও মিয়ানমার (বিসিআইএম) কানেকটিভিটি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কাজ করছে বাংলাদেশ।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, মোট বিশ্ব বাণিজ্যের মাত্র ৫ ভাগের কম বাণিজ্য হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ায়। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত ও চীনের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। আমাদের প্রয়োজনেই মেশিনারিজ ও পণ্যের কাঁচামাল সেখান থেকে বেশি আমদানি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমেরিকা, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, চিলি, জাপান, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নসহ উন্নত বিশ্বের অনেক দেশে বাংলাদেশ বেশি পণ্য রপ্তানি করে থাকে। যেসব দেশে বাংলাদেশের রপ্তানি বেশি তাও বলা উচিৎ। বাংলাদেশ সার্ভিস সেক্টর বাদে গত বছর প্রায় ৩৪ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করেছে। এ বছর ৩৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সার্ভিস সেক্টর মিলে মোট রপ্তানি ধরা হয়েছে ৪১ বিলিয়ন ডলার।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ অন্য দেশকে কোনো ধরনের বাণিজ্য সুবিধা দিচ্ছে না। দেশের শিল্প সুরক্ষা দিয়ে বাণিজ্য করছে, এ নীতির ফলে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে সিমেন্ট, রড, পেপার, টিনসহ অনেক পণ্যের ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা অর্জন করেছে। কাঁচা পাট রপ্তানির ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে। ভারত বাংলাদেশের পাটজাত পণ্যের ওপর কাউন্টার ভেলিং ডিউটি আরোপ করেছে। কিন্তু কাঁচা পাট আমদানির ওপর কোনো ডিউটি আরোপ করেনি। বাংলাদেশ সবসময় নিজেদের শিল্পের সুরক্ষা দিচ্ছে। আগামী ২৯ আগস্ট বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের ব্যাংককে বাণিজ্য সহজীকরণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে।