নিউজ ডেস্ক:
চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জন্য ১৮ হাজার ৩৭০ কোটি ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকার সম্পূরক বাজেট পাস হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গত ১ জুন ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট পেশের পাশাপাশি চলতি বছরের সম্পূরক বাজেটও পেশ করেন।
গতকাল মঙ্গলবার অর্থমন্ত্রী উত্থাপিত নির্দিষ্টকরণ (সম্পূরক) বিল-২০১৭ পাসের মধ্য দিয়ে এই সম্পূরক বাজেট পাস হয়।
চলতি অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে ২৬টি মন্ত্রণালয় এবং বিভাগে এ অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে ৩৩টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগসহ সার্বিকভাবে ২৩ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা হ্রাস করা হয়েছে। সার্বিকভাবে চলতি অর্থবছরের বাজেটে ৩০ হাজার ৫৩৫ কোটি টাকা হ্রাস পেয়েছে।
চলতি অর্থবছরের জন্য মূল বাজেটে মোট বরাদ্দ ছিল ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে মোট বরাদ্দ দাঁড়ায় ৩ লাখ ১৭ হাজার ১৭৪ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২ লাখ ৪২ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা ২ লাখ ১৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা প্রাক্কলন করা হয়েছে।
অন্যান্য খাতেও রাজস্ব প্রাপ্তি সংশোধন করায় সংশোধিত রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৩ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা। সম্পূরক বাজেটে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ খাতে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৭৫৬ কোটি ৪৬ লাখ ২৪ হাজার টাকা, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সুরক্ষা সেবা বিভাগে ২ হাজার ২৫০ কোটি ২ লাখ ৯৬ হাজার টাকা, তৃতীয় সর্বোচ্চ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খতে ২ হাজার ১৪৩ কোটি ৯৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা, চতুর্থ সর্বোচ্চ গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় খাতে ২ হাজার ৫৫ কোটি ২৩ লাখ ৭ হাজার টাকা, পঞ্চম সর্বোচ্চ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় খাতে ১ হাজার ৮০ কোটি ৮৩ লাখ ৩৩ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া সম্পূরক বাজেটে স্থানীয় সরকার বিভাগে ৯২৭ কোটি ১৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগে ২৪৫ কোটি ৪৭ লাখ ১৬ হাজার টাকা, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ খাতে ১ হাজার ১৬৬ কোটি ৭৩ লাখ ২৭ হাজার টাকা, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় খাতে ১৭৫ কোটি ৪২ লাখ ৫৮ হাজার টাকা, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ খাতে ৩৮৯ কোটি ৭৪ লাখ ৫৩ হাজার টাকা, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় খাতে ১৩১ কোটি ৮৬ লাখ ৮৭ হাজার টাকা, বিদ্যুৎ বিভাগে ৩৮৭ কোটি ৬৩ লাখ ২৩ হাজার টাকা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় খাতে ৯৪১ কোটি ৬৮ লাখ ৭৯ হাজার টাকা, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় খাতে ৮১৭ কোটি ৩০ লাখ ৮৬ হাজার টাকা, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় খাতে ২৭৭ কোটি ৪৭ লাখ ১৩ হাজার টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি খাতে স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নসহ বরাদ্দ ছিল ১ লাখ ১৯ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা হ্রাস করা হয়নি। সংসদে আজ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অনুকূলে ২৬টি মঞ্জুরি দাবি উত্থাপন এবং কণ্ঠভোটে তা পাসের মধ্য দিয়ে সম্পূরক বাজেট পাস হয়।
এর আগে সম্পূরক বাজেটের ওপর বিরোধীদলের সদস্যরা মোট ১৫০টি ছাঁটাই প্রস্তাব আনেন। এর মধ্যে চারটি দাবির ওপর আনা ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হয়। তবে এ ছাঁটাই প্রস্তাবসহ সব প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।
গতকাল দ্বিতীয় দিনের মতো সংসদের বৈঠকে সম্পুরক বাজেটের ওপর আলোচনা হয়। সরকারি দলের সংসদ সদস্য সোহরাব উদ্দিন, আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন, এম এ ওয়াহাব, জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম, নুরুল ইসলাম ওমর ও কাজী ফিরোজ রশীদ আলোচনায় অংশ নেন। আলোচনা শেষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সদস্যদের বিভিন্ন সমালোচনা ও বক্তব্যের জবাব দেন।