গত ৩৬ বছরে ফেনীতে এ ধরনের ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়নি। এবারের বন্যায় ফেনীর তিনটি উপজেলার ৯০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়ে সবকিছু লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। ১০ জেলার ৬৫টি উপজেলার ৪৯৫টি ইউনিয়ন বন্যার কবলে পড়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে মোট ৮২ হাজার ৬৯৪ জন মানুষ এবং ৭ হাজার ৭৫৫টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
বন্যায় সড়ক ও রেলপথ তলিয়ে যাওয়ায় চট্টগ্রামের সাথে সারা দেশের রেল ও সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বন্যা পরিস্থিতির অবনতির কারণে কক্সবাজারের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বন্যা আক্রান্ত এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, মেডিকেল টিম ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে জেলা-উপজেলা প্রশাসন। এদিকে দুর্গত এলাকাসমূহের মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ রয়েছে। অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুতের সংযোগও বন্ধ। বর্তমান বন্যা পরিস্থিতিতে ফেনী, কুমিল্লাসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার ডাক, টেলিযোগাযোগ বিভাগের আওতাধীন দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
এছাড়া বিটিআরসি, বিটিসিএল ও টেলিটক ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম গঠন করেছে। বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানির সহায়তায় ১০টি ভি-স্যাট প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তার মধ্যে পাঁচটি ভি-স্যাট ফেনীর জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে।
আতঙ্কে বাড়িঘর ছাড়ছেন জেলার গোমতী, কাঁকড়ি, ডাকাতিয়া, ঘুংগুর নদীর আশপাশসহ জেলার নিচু এলাকার মানুষেরা। প্রায় ১১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে গোমতীর পানি। গোমতী নদীর চরগুলো প্লাবিত হয়ে শত শত বাড়িঘর পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ।