চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের টয়লেট থেকে মোয়াজ্জেম বিশ্বাস (৭৫) নামের এক বৃদ্ধর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে হাসপাতালের পুরুষ মেডিসিন বিভাগের ৬০৫ নম্বর কক্ষের টয়লেট থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত মোয়াজ্জেম বিশ্বাস আলমডাঙ্গা উপজেলার খাদিমপুর ইউনিয়নের বটিয়াপাড়া গ্রামের মৃত দাউদ বিশ্বাসের ছেলে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রোববার সকাল সাতটার দিকে মাথা ব্যথা ও শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে মোয়াজ্জেম সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। বিকেলে মেডিসিন বিভাগের কর্তব্যরত সিনিয়র স্টাফ নার্স রোগীদের ওষুধ দিচ্ছিলেন। তিনি ওয়ার্ডের ৬০৫ নম্বর কক্ষে গেলে ১১৪ নম্বর শয্যার রোগী মোয়াজ্জেম টয়লেটে আছেন বলে জানতে পারেন। এসময় রোগীর পরিবারের সদস্যরা তাকে ডাকতে গেলে কোনো সাড়া না পেয়ে দরজায় ধাক্কা দেয়। পরে টয়লেটের দরজার ছিটিকিনি ভেঙে ভেতরে মোয়াজ্জেমকে টয়লেটের জানালার সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয়া ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। খবর পেয়ে পুলিশ, হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার দ্রুত ওয়ার্ডে পৌঁছান। এসময় লাশ উদ্ধার করে মর্গে নেয়া হয়।
ওয়ার্ডের একই কক্ষে চিকিৎসাধীন রোগী হামিদুল ইসলামের স্ত্রী মিনি বেগম বলেন, ভর্তির পর থেকে ওই রোগী অনেক চিৎকার-চেঁচামেচি করছিলেন। তিনি বারবার টয়লেটেও যাচ্ছিলেন। বিকেলে শেষবার টয়লেটে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে নার্স ওষুধ দিতে এলে তাকে ডাকতে যায়। এসময় কোনো সাড়া না পেলে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকলে তাকে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।
মোয়াজ্জেমের স্ত্রী জরিনা বেগম বলেন, ‘দুপুর পর্যন্ত সে ভালোই ছিল। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে টয়লেটে গিয়েছিল। পরে সেখান তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।’ ওই বৃদ্ধর বড় মেয়ে লাইলী খাতুন জানান, তার পিতা বেশকিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। তার মাথায় সমস্যার কারণে এর আগেও গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। সকালে বেশি অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
চুয়াডাঙ্গার হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন বলেন, ‘বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে খবর পেয়ে দ্রুত ওয়ার্ডে যায়। পরে হাসপাতাল পুলিশের সাহায্যে তার লাশ টয়লেট থেকে বের করা হয়। টয়লেটের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। বিষয়টি থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।