স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ-
ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুতে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গত ১ জুলাই শহরের হাসপাতাল মোড় এলাকার ভাই ভাই ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে। জানা যায়, ৩০জুন রুপালী খাতুন (২৫) নামে উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের এক নারী ওই ক্লিনিকে ভর্তি হন। রাত নয়টার দিকে কালিগঞ্জ হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন তাঁর সিজারিয়ান অপারেশন করেন। এ সময় ওই নারীর একটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয়। অপারেশনের পর নবজাতক শিশু ও মা দু‘জনেই সুস্থ ছিল।
স্বজনদের অভিযোগ, রাতে নবজাতককে অক্সিজেন দেয় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। পরে সেটি খুলে ফেলে মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে বলে। দুধ খাওয়ানোর পর নবজাতক ঘুমিয়ে পড়ে। পরদিন ভোরে ঘুমন্ত অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। নবজাতকের বাবা নিয়াজি জানান, অপারেশনের পর সুস্থ সন্তান জন্ম নেয়। তখন সন্তান ও তাঁর মা দুজনেই সুস্থ ছিল। তাহলে কীভাবে ঘুমের মধ্যে আমার শিশু বাচ্চা মারা গেল। নিশ্চয় কারও না কারও অবহেলা ছিল। ওই ক্লিনিকের মালিক আসমত আলীর কাছে জানতে চাইলে প্রথমে শিশুটি মায়ের গর্ভে মারা গেছে বলে দাবি করেন।
সুস্থ সন্তানের জন্ম হয়েছে এমন কথা ডাক্তার জানিয়েছেন জানালে আসমত আলী বিষয়টি এড়িয়ে যান। স্থানীয়দের অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে কোনো অভিযোগ না দিতে নানাভাবে ওই নবজাতকের বাবাকে হুমকি দিচ্ছেন ক্লিনিক মালিক আসমত। রুবেল নামে স্থানীয় এক যুবক জানান, ঘটনাটি কাউকে না বলতে ক্লিনিক মালিক নবজাতকের বাবাকে হুমকি দিচ্ছেন। এর আগেও এই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের ভুলে কয়েকজন প্রসূতি ও নবজাতক মারা গেছে। অনেকবার ক্লিনিকটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এই যুবকের দাবি, মানহীন এই ক্লিনিকটিতে প্রায়ই দূর্ঘটনা ঘটে। সাময়িক এটি বন্ধ থাকে। কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে ফের চালু করা হয়।
চিকিৎসক আলমগীর হোসেন বলেন, আমি অপারেশন করার পর নবজাতক ও মা দু‘জনেই সুস্থ ছিল। শুনেছি ঘুমের মধ্যে মারা গেছে। কী সমস্যা হয়েছিল এটা আমি জানি না। ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন শুভ্রা রাণী দেবনাথ বলেন, কোনোভাবেই নবজাতকের মৃত্যু কাম্য নয়। এ ঘটনায় তদন্ত করে যারই অবহেলা পাওয়া যাবে তার বিরুদ্ধেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।