রিপোর্ট, ঝিনাইদহ-
ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা। লাঠিখেলাকে কেন্দ্র করে উপজেলার পোলতাডাঙ্গা পরিণত হয়েছিলো উৎসবের নগরীতে। যা দেখতে দুর-দুরান্ত থেকে ভীড় করেছিলো হাজারো দর্শনার্থী। দীর্ঘদিন পর এ আয়োজন করায় খুশি দর্শক ও খেলোয়াড়রা।
গত শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ঝিনাইদহ জেলার হরিনাকুন্ডু উপজেলার পোলতাডাঙ্গা গ্রামে পূর্বপাড়ার যুব সমাজ এ খেলার আয়োজন করে। ১২ বছর বয়সী ক্ষুদে লাঠিয়াল বিশাল হোসেনের লাঠির জাদুতে মেতে ওঠে দর্শক। প্রতিযোগিতায় পেরে ওঠে না তার চাচা আনোয়ার হোসেন। যা দেখে আনন্দ যেন বেড়ে যায় দর্শকদের মাঝে। সেই সাথে বাদ্যের তালে তালে নেচে অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন দর্শকদের নিয়ে যায় ঘোরের রাজ্যে। শুরু হয় লাঠি নিয়ে আক্রমন পাল্টা আক্রমন।
লাঠির আঘাত রুখে দিয়ে পাল্টা আঘাতের মধ্য দিয়ে নিজের বীরত্ব প্রকাশ করতে উঠেপড়ে লাগে লাঠিয়ালরা। যা দেখে আনন্দে মেতে ওঠে উপস্থিত দর্শকরা। দীর্ঘদিন পর এ ধরনের খেলা দেখে খুশি দর্শকরা। সেই সাথে খেলায় অংশ নিতে পেরে খুশি খেলোয়াড়রাও। দিনভর এই আয়োজনে ঝিনাইদহ ও পার্শবর্তী চুয়াডাঙ্গা উপজেলা থেকে ৮ টি লাঠিয়াল দলের অর্ধশত খেলোয়াড় খেলা প্রদর্শণ করেন। সবাইকে পেছনে ফেলে প্রথম হয় শ্রীরামপুর গ্রামের মহি সর্দার।
তোলা গ্রামের লাঠিয়াল সর্দার মন্টু হোসেন বলেন, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দর্শনার্থীদের বাড়তি আনন্দ ও বিনোদন দিতে আমরা লাঠি খেলা দেখাই। তাদের আনন্দে আমরা মজা পায়। এ খেলা আমাদের পূর্ব-পুরুষের। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে গ্রামীণ ঐহিত্যবাহী এ খেলাটি টিকে রাখা সম্ভব হবে।
পোলতাডাঙ্গা গ্রামের শিপন হোসেন বলেন, কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়া এ লাঠি খেলা দেখতে হাজির হন নানা বয়সের মানুষ। দর্শনার্থীদের বাড়তি আনন্দ ও বিনোদন দিতে কিছুটা হলেও পুরানো দিনের গ্রামীন চিত্ত বিনোদনের সুযোগ পান বয়ো-বৃদ্ধরা।
পোলতাডাঙ্গা গ্রামের আয়োজক কমিটির আব্দুল গাফ্ধসঢ়;ফার বলেন, মাঠের স্বল্পতা আর ভিডিও গেমসের কারণে আমাদের শিশুরা ঘর মুখো। প্রথম বারের মত আমরা গ্রামিন এ খেলার আয়োজন করি।
আগামীতে আরও বড় করে লাঠি খেলা করানো হবে। গ্রামীণ ঐতিহ্য ধরে রাখতে আর মানুষকে আনন্দ দিতেই এ আয়োজন। সব শেষে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। খেলা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।