নিউজ ডেস্ক:আলমডাঙ্গায় গরু ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে একদল সশস্ত্র ডাকাত ৩ লক্ষাধিক টাকা লুট করেছে। গতকাল শনিবার রাত ৮টার দিকে আলমডাঙ্গা উপজেলার কুমারী ইউনিয়নের দুর্গাপুর সড়কে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় ডাকাত দলের অস্ত্রের আঘাতে তিন গরু ব্যবসায়ী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ডাকাতির কবলে পড়া ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা জানান, গতকাল আলমডাঙ্গা উপজেলার নতিডাঙ্গা গ্রামের ৮-১০ জন গরুর ব্যবসায়ী কুষ্টিয়ার বেলেপাড়া গরুর হাটে গরু বিক্রি করে ফিরে আসার সময় রাত ৮টার দিকে দুর্গাপুর সড়কের কবরস্থানের কাছাকাছি পৌঁছালে তাঁদের বহন করা লাটাহাম্বারটি সড়কে গাছ ফেলে আটকে দেয় এক দল সশস্ত্র ডাকাত এবং দেশীয় অস্ত্রের মুখে তাঁদের জিম্মি করে। এরপর ওই ডাকাত দলের ১২-১৩ জন মুখোশধারী সদস্য তাঁদের হাতের অস্ত্র দিয়ে মারধর শুরু করেন গরুর ব্যবসায়ীদের। এলোপাতাড়ি মারধর করে তাঁদের কাছ থেকে গরু বেচা-কেনার টাকা ছিনিয়ে নেয় ডাকাতেরা। এ সময় ওই সড়ক দিয়ে যাতাযাত করা বেশ কয়েকজন আলমসাধুর যাত্রীকেও জিম্মি করে তাঁদের কাছে থাকেও নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন লুট করে ডাকাতেরা। এভাবে প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে ডাকাতি শেষে ডাকাত সদস্যরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে ডাকাতির কবলে পড়া ব্যবসায়ীদের চিৎকারে গ্রামবাসী ছুটে এসে তাঁদের উদ্ধার করে। এ সময় ডাকাতদের অস্ত্রের আঘাতে আহত তিন গরু ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। আহত গরু ব্যবসায়ীদের মধ্যে হাশেম নামের এক ব্যক্তি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এ বিষয়ে আলমডাঙ্গার নতিডাঙ্গা গ্রামের ইউপি সদস্য শরিফুলসহ স্থানীয়রা জানান, গ্রামের কাওছার মণ্ডলের ছেলে শরিফ, মৃত বাদলের ছেলে হাসেম, নুর ইসলামের ছেলে শহিদুল, মৃত রবিউলের ছেলে রফিকুল, গোবিন্দর ছেলে সুজন কুমার, আবু তালেবের ছেলে তানসিল, শুকুর আলীর ছেলে তরিকুল-এঁরা সবাই গরুর ব্যবসায়ী। গতকাল শনিবার সকালে এ ব্যবসায়ীরা একই গ্রামের তামজেদের লাটাহাম্বারটি ভাড়া নিয়ে কুষ্টিয়া বেলেপাড়া হাটে যান গরু বেচা-কেনা করতে। এরপর রাতে বাড়ি ফেরার পথে রাত সাড়ে আটটার দিকে বন্ডবিল ও দুর্গাপুরের মাঝামাঝি একটি ইটভাটা পার হয়ে কবরস্থানের কাছে পৌঁছালে পূর্ব থেকে ওত পেতে থাকা ১০-১২ জনের একটি সশস্ত্র ডাকাত দল বোমাসহ রামদা হাতে তাঁদের বহণকারী লাটাহাম্বারটির গতিরোধ করে এবং প্রত্যেক গরু ব্যবসায়ীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। এ সময় গরু ব্যবসায়ী শরিফের কাছ থেকে ২ লাখ ২০ হাজার, হাসেমের ৯০ হাজার, রফিকুলের ১০ হাজার, শহিদুলের ১৬ হাজার মোট ৩ লাখ ৩৬ হাজার টাকা লুট করে ডাকাতেরা।
এদিকে, ডাকাতির খবর পেয়ে রাত ৯টার দিকে আলমডাঙ্গা থানার পুলিশের বেশ কয়েকটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এ সময় ডাকাত সদস্যদের আটকে পুলিশি অভিযান চালানো হলেও শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি ডাকাতির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বাড়ি ফেরার পথে গরুর ব্যবসায়ীদের দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে গরু বিক্রির টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় আলমডাঙ্গা থানার পুলিশ। ওই সময় আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে ডাকাত সদস্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।