হাবিবুল ইসলাম হাবিব, টেকনাফ :
টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপে আটকে পড়া পর্যটকদের মধ্যে ৩ শত জন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে করে টেকনাফে পৌঁছে। গতকাল রোববার দুপুর ১টার দিকে আটকে পড়া পর্যটকরা পাঁচটি ট্রলার করে টেকনাফে আসেন। তবে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ট্রলার চালানোর দায়ে ট্রলার মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
সুত্রে জানা যায়, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে গত শনিবার দিনভর উপকূলীয় এলাকায় ভারী বৃষ্টি হয়। সাগর উত্তাল ছিল, এ কারণে কক্সবাজারে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয় এবং সব ধরনের নৌ-যান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে সেন্টমার্টিন দ্বীপে বেড়াতে গিয়ে প্রায় ৬০০ পর্যটক আটকা পড়েন। তবে গতকাল ১০ ডিসেম্বর সকাল থেকে বৃষ্টি নেই। সেখানে রোদও দেখা দিয়েছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী আবহাওয়াবিদ উজ্জ্বল কান্তি পাল জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি এখন দুর্বল হলে লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি এখন কক্সবাজার থেকে ৬৭৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। তবে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত বহাল রয়েছে।
টেকনাফ সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সৈয়দ আলম বলেন, টেকনাফ জেটি ঘাট থেকে কোন ধরনের জাহাজ সেন্টমার্টিনে যায়নি। এ খবর পেয়ে পর্যটকেরা গতকাল রোববার সকাল সাড়ে নয়টার পর সেন্টমার্টিনের জেটিঘাটে ভিড় করেন। এ সময় পাঁচটি ট্রলারে ৩০০ জন যাত্রী ওঠানো হয়। এই পর্যটকদের কাছ থেকে জনপ্রতি ২০০ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়। সাগরে মাঝপথে ট্রলারগুলো উত্তাল ঢেউয়ের কবলে পড়লেও কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ছাড়াই সাড়ে ১২টায় তিনটি ট্রলার টেকনাফ পেীরসভার কায়ুকখালিয়া ঘাটে পৌঁছায়। এর পরে বাকি দুটি পৌঁছায়। সৈয়দ আলম আরো জানান, ট্রলারগুলোতে স্থানীয় বাসিন্দারাও ছিলেন।
সেন্টমার্টিন দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর আহম্মদ বলেন, বঙ্গোপসাগরে সতর্কসংকেত বহাল রয়েছ। কিন্তু সাগর তেমন উত্তাল নেই। সকাল থেকে বৃষ্টিও নেই। অন্য সময় এ ধরনের পরিস্থিতিতে ওই রুটে ট্রলার চলাচল করে। তাই পর্যটকরা যেতে চাওয়ায় তাঁদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
টেকনাফে ফিরে আসা ঢাকা মিরপুর এলাকার ব্যবসায়ী সুজন মাহমুদ জানান, গত বৃহস্পতিবার স্ব-পরিবার নিয়ে বেড়াতে গিয়ে আটকা পড়েন। অন্যদের ফির আসতে দেখে তিনি ফিরে আসেন। মাঝপথে ঢেউয়ের দুলনিতে তাঁর ছোট সন্তান কয়েকবার বমি করে। তিনি আরো বলেন, এভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আসা ঠিক হয়নি।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদ হোসেন সিদ্দিকী বলেন, বঙ্গোপসাগরে ৩নং সংকেত রয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রলার না ছাড়ার জন্য ট্রলার মালিক সমিতিকে নির্দেশও করা হয়। যারা নিয়ম ভেঙেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু সকালে স্থানীয় চেয়ারম্যান ফোন করে বলেন, সাগর তেমন উত্তাল নেই। রোদ উঠেছে।