নিউজ ডেস্ক:
বিশ্বের স্থূলতম নারী ইমান আহমেদ ধীরে ধীরে সুস্থতার দিকে এগোচ্ছেন। ভারতে চিকিৎসাধীন মিশরীয় এই নারীর ওজন প্রায় ১২০ কেজি কমিয়ে আনা হয়েছে। সোমবার নবভারতটাইমস.কম জানায়, ৩৬ বছর বয়সী ইমানের অপারেশন করা হয় ১১ দিন আগে। তার অবস্থার উন্নতি হচ্ছে, তবে তা খুব ধীর লয়ে।
দুনিয়ার জীবিত নারীদের মধ্যে সবচেয়ে মোটা আর ওজনদার হিসেবে ধারণা করা হয় তাকে। ওজন কমানোর সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকরা তার ফুঁসফুঁসের দিকেও নজর রাখছেন বিশেষভাবে। কারণ, এর প্রভাবে তার হৃৎপিণ্ডে সমস্যা হচ্ছে। একই সঙ্গে মৃগীরোগের সমস্যাও দেখা দিয়েছে তার।
চিকিৎসা শুরুর আগে তার ওজন ছিল ৪৯৮ কেজি।
মুম্বাইর সাইফি হাসপাতালের চিকিৎসক মুজাফ্ফর লাকরাওয়ালা জানান, ইমানের ওজন এখন ৩৭৮ কেজি। যখন তিনি হাসপাতালে আসেন তখন তার ওজন ছিল ৪৯৮ কেজি। আমরা আধা লড়াই জিতে গেছি, কিন্তু যুদ্ধের অর্ধেক এখনও বাকি রয়েছে। ইমান আহমেদ পুরোপুরি সুস্থ- এ কথাটি বলতে এখনও অনেক পথ বাকি আছে।
গত ৭ মার্চ ইমানের শরীরে অস্ত্রোপচার করা হয়- তবে ডা. লাকরাওয়ালার মতে এটা ইমানের চিকিৎসার সবচেয়ে ছোট অংশ ছিল। তখন দেখা যায় তার পেটে অনেক জলীয় পদার্থ রয়েছে যা লিভারের (কলিজা) ক্ষতির কারণ হতে পারে। এরপর তার বায়োপসির জন্য চেন্নাই থেকে বিশেষ চিকিৎসক ডাকা হয়। কিন্তু পরে বোঝা যায় তার লিভার ঠিক আছে। সমস্যা ধরা পরে হৃৎপিণ্ডের কর্মকাণ্ডে- এর কারণেই লিভারে সমস্যা অনুভূত হচ্ছে।
তিনি জানান, এখন তিনি ৩০ শতাংশ ভালো আছেন।
মিসরীয় নারী ইমান আহমেদ আবদুলাতি অত্যধিক মটুত্বের কারণে ২৫ বছর ধরে বাড়ির বাইরে বের হতে পারতেন না। এমনকি বিছানা থেকে নড়াচড়া কিংবা গড়াগড়ি দিতেও পারতেন না তিনি। বর্তমানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
উত্তর মিশরের আলেকজান্দ্রিয়াবাসী এই নারীর প্রাকৃতিক কাজ সারাসহ অন্যান্য দরকারি কাজে অন্যের সাহায্য প্রয়োজন হয়।
জন্মের সময় তার ওজন ছিল ৫ কেজির মতো। চিকিৎসকরা দেখতে পান মেয়েটি এলিফ্যানটাইটিস নামে একটি রোগে ভুগছেন। একটি ছত্রাকের সংক্রমণের ফলে আক্রান্ত ব্যক্তির অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও হাত পা মোটা হতে থাকে। এছাড়াও তার গ্লান্ডে সমস্যার কারণে শরীরে প্রয়োজনের বেশি পানি জমতে থাকে। ১১ বছর বয়সেই ওজন এতো বেড়ে যায় যে, সে দাঁড়িয়ে থাকতে পারতো না।
অতিরিক্ত মেদবৃদ্ধির কারণেই স্কুলে যেতে পারেননি ইমান। কেউ কেউ আবার মনে করেন, শৈশবে বাবার মৃত্যুতে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন বলেই শরীরের ওজন দ্রুত বাড়তে শুরু করে। নিজেরা চিকিৎসায় ব্যর্থ হয়ে শেষপর্যায়ে মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসির আছে চিকিৎসা সহায়তা চায় তার পরিবার। তারই ধারাবাহিকতায় তাকে ভারতে পাঠানো হয় চিকিৎসার জন্য।
দেশ ছাড়ার আগে ইমানের ওজন ছিল প্রায় ৫০২ কেজি। শেষদিকে তার ওজন এমনভাবে বাড়ছিল যে অচিরেই তার জীবনাবসানের শঙ্কা দেখা দেয়।