নিউজ ডেস্ক:
সকালের নাস্তায় প্রতিদিন একটি করে সেদ্ধ ডিম রাখা উচিত। তাড়াহুড়ার কারণে যদি নাস্তা খাওয়ার সময় না থাকে, তাহলে সেদ্ধ ডিমটি খেয়েই সেরে নিন সকালের নাস্তা। ডিমে আছে ভিটামিন, প্রোটিন ও শরীরের জন্য উপকারী চর্বি উপাদান। সাম্প্রতিক এক গবেষণা ও সমীক্ষায় চিকিৎসকরা বলছেন, ভালো থাকার জন্য প্রতিদিন ২ থেকে ৩টি ডিম খাওয়া উচিত। তবে আর দেরি না করে চলুন জেনে নেই শরীর সুস্থ রাখতে ডিমের উপকারিতা সম্পর্কে।
১. ক্যান্সারের সম্ভাবনা কমায়
গবেষণায় দেখা গেছে, একটি ডিম স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি ১৮ শতাংশ কমিয়ে দেয়। শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে স্তন ক্যান্সারের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।
২. হৃদরোগের সম্ভাবনা কমায়
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লুইসিয়ানার বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টারের গবেষণায় ১৫২ জন অতিস্থুল ব্যক্তিদের তিনটি গোষ্ঠীতে ভাগ করা হয়। এক গোষ্ঠীকে বলা হয়, ব্রেকফাস্টে যা ইচ্ছে তাই খেতে। দ্বিতীয় দলকে বলা হয়, ব্রেকফাস্টে দু’টি করে ডিম খেতে। তৃতীয় গোষ্ঠীকে বলা হয় ব্যাগেলস খেতে। রেজাল্টে দেখা গেছে, যারা রোজ দু’টি করে ডিম খেয়েছেন, তারা বাকি দুই গোষ্ঠীর থেকে ৬৫ শতাংশ বেশি ওজন ঝরিয়েছেন ও ৩৫ শতাংশ পেটের মেদ ঝরিয়েছেন।
ডিমে থাকা প্রচুর পরিমাণ ওমেগা-৩ রক্তে থাকা ট্রাইগ্লিসারিড লেভেল কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। যার জেরে হৃদরোগের সম্ভাবনা কমে।
৩. চুল, ত্বক ও লিভার ভালো রাখে
ডিমে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বি১২, বায়োটিন ও প্রোটিন থাকে। যা চুলের বৃদ্ধি ও চামড়ার জন্য খুবই উপকারী। বিশেষ করে ডিমের কুসুম চুলের জন্য দারুণ উপকারী।
৪. প্রসবজনীত সমস্যার ঝুঁকি কমায়
একটি ডিমে ০.৭ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি৯ থাকে, যাকে ফলিক অ্যাসিডও বলা হয়। গর্ভাবস্থায় শরীরে ফলিক অ্যাসিডের পরিমাণ কম হলে শিশুর সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম ঠিক মতো তৈরি হয় না। ফলে নার্ভের রোগের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
৫. শক্তি যোগায়
একটি ডিমে প্রায় ৮০ ক্যালরি আছে। এর মধ্যে ৬০% ক্যালরি আসে চর্বি থেকে। ফলে সকালের নাস্তায় একটি মাত্র ডিম খেলে সারাদিন শক্তি পাওয়া যায় এবং দূর্বলতা হ্রাস পায়।
৬. চোখ ভালো রাখে
ডিমে থাকা প্রচুর পরিমাণ লিউটিন ও ভিটামিন ‘এ’ থাকে যা চোখের জন্য খুবই উপকারী। দিনের আলোয় চোখের উপর যে চাপ পড়ে, তা কমিয়ে দেয়। দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়।
৭. বয়সকে ধরে রাখে
বার্লিনের বিখ্যাত হেল্থ সেন্টার Charité-র গবেষণা বলছে, ডিম ত্বকের বলিরেখা পড়তে দেয় না। ফলে বয়স বৃদ্ধিজনীত ত্বকের সমস্যা কমিয়ে দেয়। চামড়ায় উজ্জ্বলতা আনে। ত্বকের ক্যান্সারও রোধ করে। চিকিত্সা বিজ্ঞানীদের মতে, ডিমের কুসুমে প্রাকৃতিক হলুদ রং থাকে। ওই রঙে প্রচুর পরিমাণ ক্যারোটেনয়েড থাকে। যা ত্বককে উজ্জ্বল করে।
৮. প্রোটিন
ডিমে প্রাকৃতিক ভাবেই প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন আছে। সকাল বেলা নাস্তায়একটি সেদ্ধ ডিম খেলে ৬ গ্রামের বেশি প্রোটিন পাওয়া যায়।
৯. হাড় গঠন
ডিমে আছে ভিটামিন ডি যা হাড় ও দাঁত শক্ত করে। ভিটামিন ডি খাবার থেকে ক্যালসিয়াম গ্রহণ করতে সহায়তা করে এবং রক্তের ক্যালসিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে শরীরের হাড়ের কাঠামো মজবুত ও শক্ত হয় এবং হাড়ের ক্ষয় রোধ হয়। প্রতিদিন সকালের নাস্তায় একটি ডিম খেলে ৪৫ আন্তর্জাতিক ইউনিট ভিটামিন ডি পাওয়া যায় যা হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে।