নিউজ ডেস্ক:
টানা বৃষ্টিতে সিলেট মহানগরীতে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে নগরীর অন্তত ৫০টি এলাকায় পানি জমে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে নগরবাসীকে। পানি নিষ্কাশনের অন্যতম মাধ্যম নগরীর ছড়া ও খাল ভরাট ও দখল হয়ে যাওয়ায় বর্ষার শুরুতেই নগরবাসীকে পড়তে হয়েছে চরম দুর্ভোগে।
বুধবার ভোররাত থেকে সিলেটে ভারী বর্ষণ শুরু হয়। টানা দিনভর বর্ষণে নগরীর উপশহর, সোনারপাড়া, মিরাবাজার, যতরপুর, রায়নগর, ছড়ারপার, মাছিমপুর, তালতলা, জামতলা, দাড়িয়াপাড়া, লামাবাজার, ভাতালিয়া, বিলপাড়,সুবিদবাজার, বনকলাপাড়া, হাউজিং এস্টেট, জালালাবাদ, লোহারপাড়া, বাগবাড়ি, কুয়ারপার, চারাদিঘীরপাড়, রায়হোসেন, হাওয়াপাড়া, বারুতখানা, সোবহানীঘাট,কলবাখানি, কুয়ারপাড়, কাজলশাহ, পাঠানটুলা, খোজারখলা, ভার্থখলা, মেনিখলা, পাঠানপাড়াসহ অন্তত ৫০টি এলাকা বৃষ্টির পানিয়ে তলিয়ে গেছে।
এসব এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, কোথাও কোথাও সড়কে হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি জমেছে। কোনো কোনো এলাকায় বাসা বাড়িতেও পানি উঠেছে। পানি উঠেছে দোকানপাটেও।
নাজুক ড্রেনেজ ব্যবস্থা, বিভিন্ন ছড়া-খাল দখলমুক্ত ও সংস্কার না হওয়াকেই জলাবদ্ধতার কারণ হিসেবে দায়ি করছেন নগরবাসী।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, পানি নিষ্কাশনের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে সিলেট নগরীর ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে ছোট বড় ১২টি ছড়া ও খাল। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ধুবড়িছড়া, গুয়ালিছড়া, মালনীছড়া, ভূবিছড়া, বারুতখানাছড়া, মির্জাজাঙ্গালছড়া, কেওয়াছড়া, বৈঠাছড়া, গাভিয়াল খাল ও রত্মারখাল। এ সকল ছড়া দিয়ে বর্ষা মৌসুমে এক সময় বড় বড় নৌকা চলত। মানুষ যাতায়াত করত দূর-দূরান্তে। কিন্তু এখন ছড়াগুলোর অস্তিত্ব কেবলমাত্র সিটি কর্পোরেশনের মানচিত্রে। ছড়াগুলো এখন সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে। অনেক স্থানে ছড়া ও খালের কোনো অস্তিত্বই নেই। ছড়া ও খালের উভয় পাশ ভরাট করে গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ স্থাপনা। অনেকে আবার পুরো ছড়া ভরাট করেই দালান নির্মাণ করেছে।
ছড়া ও খাল দখলমুক্ত এবং জলাবদ্ধতা নিরসন প্রসঙ্গে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে সিটি কর্পোরেশন রুটিন কাজ করেই থাকে। তবে ভারী বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।
তিনি বলেন, সম্প্রতি একনেকে নগরীর ১১টি ছড়া-খাল উদ্ধার করতে ২৩৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প পাশ হয়েছে। এ প্রকল্পের কাজ জুলাইয়ে শুরু হবে। এ কাজ শেষ হলে নগরীর জলাবদ্ধতা কমে আসবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।