নিউজ ডেস্ক:
আগামী ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে রাশিয়া, বেলারুশ ও কানাডা থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) কর্তৃক মিউরেট-অব-পটাশ (এমওপি) সার আমদানির চুক্তি নবায়ন করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। দেশ তিনটি থেকে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টন এমওপি সার আমদানি করা হবে।
সূত্র জানায়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের সমীক্ষার মাধ্যমে বছরের শুরুতেই বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক সারের চাহিদা নিরুপণ করা হয়। আগামী ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশে এমওপি সারের বাৎসরিক চাহিদা নিরুপণ করা হয় ৮ লাখ ৫০ হাজার টন। বাংলাদেশে এ সার উৎপাদন হয় না। সাধারণত বেসরকারি পর্যায়ে আমদানিকারকদের মাধ্যমে এবং বিএডিসি কর্তৃক রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে আমদানি করে বাংলাদেশের কৃষকদের সারের চাহিদা মেটানো হয়।
সূত্র জানায়, সরকারি পর্যায়ে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ২০০৮ সাল থেকে বিভিন্ন দেশের সরকারি সংস্থার সঙ্গে রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে এ সার আমদানি করছে। বর্তমানে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে রাশিয়া, বেলারুশ এবং কানাডা থেকে বিএডিসি এমওপি সার আমদানি করছে। এর আগে রাশিয়া, বেলারুশ ও কানাডা থেকে রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে এমওপি সার আমদানিতে ইতিপূর্বে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন নেওয়া হয়।
সূত্র জানায়, বিএডিসি রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় ২০০৯-২০১০ অর্থবছর থেকে ২০১৫-২০১৬ অর্থবছর পর্যন্ত ৪ লাখ ৯১ হাজার টন এমওপি সার আমদানি করেছে। এর মধ্যে ২০০৯-২০১০ অর্থবছরে ১ লাখ ৫৪ হাজার টন, ২০১০-২০১১ অর্থবছরে ১ লাখ ৮৫ হাজার টন, ২০১১-২০১২ অর্থবছরে ২ লাখ ৬৪ হাজার টন, ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে ৪ লাখ ১৭ হাজার টন, ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে ৩ লাখ ৮২ হাজার টন, ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে ৩ লাখ ৮২ হাজার টন এবং ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে ৪ লাখ ৯১ হাজার টন এমওপি সার আমদানি করা হয়েছে।
দেশ তিনটি থেকে ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে রাশিয়ার জেএসসি ‘ফরেন ইকোনমিক অ্যাসোসিয়েশন’থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টন সার আমদানির চুক্তি ছিল। চুক্তির মেয়াদ ২০১৬ সালের ১৮ জুন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ছিল। বেলারুশের বেলারুশিয়ান পটাশ কোম্পানি থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টন এমওপি সার আমদানির চুক্তির মেয়াদ ছিল ২০১৬ সালের ২৪ জুন থেকে ২০১৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। কানাডার কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশন থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টন সার আমদানির চুক্তির মেয়াদ ছিল ২০১৬ সালের ১২ মে থেকে ২০১৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত।
সূত্র জানায়, আগামী জুনে দেশ তিনটির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষে হবে। দেশের কৃষি খাতে এমওপি সার অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। সময়মতো সার আমদানি করা না হলে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে। এজন্য আগামী ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের সমপরিমাণ অর্থাৎ ১ লাখ ৮০ হাজার টন করে দেশ তিনটি থেকে মোট ৫ লাখ ৪০ হাজার টন সার আমদানির জন্য চুক্তি নবায়নের পরিকল্পনা নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। আন্তর্জাতিক দর অনুযায়ী সারের দাম নির্ধারণ করা হবে। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে বলে কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।