বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। তাদের দল বাদে অন্য সব রাজনৈতিক দলগুলোর নামে মিথা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে, চাঁদাবাজি করেছে, এলাকাছাড়া করেছে। কিন্তু আজ ১৬ বছর পর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাদের পতন হয়েছে। আজকের এই গণঅভ্যুত্থানের পর একটি দল বা দলের নেতাকর্মীরা যদি একই কাজ করেন তাহলে তাদের থেকে কী শিক্ষা নিলেন? আমরা নির্যাতকের পরিবর্তন চাই না, নির্যাতনের সিস্টেমের পরিবর্তন চাই।
আজ বুধবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নতুন ভিডিও বার্তায় এসব কথা বলেন সারজিস আলম।
ক্ষমতার অপব্যবহারের নোংরা সংস্কৃতি কোনোভাবে সমর্থনযোগ্য নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে কোনো ত্রাণের ট্রাক কোথাও গেলেও টোল দিতে হবে। কেননা দেশকে স্থিতিশীল করতে হলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল করতে হবে। কিন্তু ক্ষমতার অপব্যবহার করার যে নোংরা সংস্কৃতি ছিল এত বছর ধরে, এখন আপনি যদি সামান্য কিছু অস্থিতিশীল অবস্থা দেখেন সেই ক্ষমতার অপব্যবহার করেন কিংবা কোনো সেতুতে টোল দেওয়া বন্ধ করে দেন বা স্টিকার দেখিয়ে পার হয়ে যান এটিকে আমরা কোনোদিনও সমর্থন করি না। আমাদের জায়গা থেকে স্পষ্ট বার্তা হলো এসব সেতুর টোল দিয়ে যেতে হবে। কেননা ত্রাণের কথা বলে কোনো একটি গাড়ি পার হয়ে গেলে তার সঙ্গে আরও অনেক গাড়ি পার হয়ে যাচ্ছে। এটা সমর্থন করি না।
দেশবাসীর উদ্দেশে সারজিস বলেন, রাষ্ট্র সুন্দরভাবে চলার জন্য রাষ্ট্রের আয়ের উৎসগুলো সুন্দরভাবে চলতে হবে। আমাদের স্পষ্ট বার্তা হলো আপনাদের চোখে সামনে অনেকগুলো জলন্ত উদাহরণ রয়েছে। সেগুলো থেকে শিক্ষা নিন। না হলে জনগণ আপনাদের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করবে। আমরা এটা দেখতে চাই না যে আবার কাউকে মিথা মামলা বা হয়রানির সেই সিস্টেমের মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে।
‘বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ১৫টি সেতুতে ছাত্রদের কথা বলে টোল আদায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বার্তা হলো এটি রাষ্ট্রের আয়ের উৎস। ফলে কেউ স্টুডেন্টদের কথা বা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাম অপব্যবহার করে এ কাজ করবেন না। প্রতিটি ব্রিজে টোল দিতে হবে’, বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম এ সমন্বয়ক।
রাষ্ট্রকাঠামো পরিচালনায় ক্ষমতার অপব্যবহার কখনোই গ্রহণযোগ্য নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, মিথ্যা মামলা, চাঁদাবাজি, হয়রানি, নির্যাতন এসব আমরা সমর্থন করি না। এই কলুষিত সিস্টেমের বিরুদ্ধেই ছিল ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থান। নতুন বাংলাদেশে এসবের পুনরাবৃত্তি আমরা চাই না। তাহলে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সাথে আপনাদের কোনো পার্থক্য থাকে না। তাছাড়া সড়কের প্রত্যেক সেতুতে অবশ্যই নিয়ম অনুযায়ী টোল দিতে হবে।