নিউজ ডেস্ক:
২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে সর্বোচ্চ করহার কমানোর প্রস্তাব করেছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই)।গতকাল বুধবার সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় সংস্থাটির পক্ষ থেকে আয়কর, মূল্য সংযোজন কর ও শুল্ক বিষয়ে একগুচ্ছ প্রস্তাব দেওয়া হয়।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান।
সর্বোচ্চ করহার ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব জানিয়ে এমসিসিআই এর সহসভাপতি গোলাম মহিউদ্দিন বলেন, ‘বর্তমানে ব্যক্তির ক্ষেত্রে আয়করের সর্বোচ্চ হার ৩০ শতাংশ। চেম্বার অনুভব করে, এই করহারের সামান্য হ্রাসে ব্যক্তি করদাতার ক্ষেত্রে তাদের সত্যিকার আয়কর প্রকাশে উৎসাহিত করবে এবং কর ফাঁকি অনেকাংশে হ্রাস পাবে। তাই চেম্বার মনে করে, ব্যক্তি করদাতার আয়করের সর্বোচ্চ হার যুক্তিসঙ্গত পর্যায়ে হ্রাস করা প্রয়োজন। অবশ্যই তা ২৫ শতাংশের ঊর্ধ্বে হওয়া উচিত নয়।
৫ কোটি টাকা পর্যন্ত নিট সম্পদের ওপর সারচার্জ শূন্য শতাংশ করার দাবি জানিয়ে লিখিত প্রস্তাবে এমসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, বর্তমানে নিট সম্পদ ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার বেশি হলে সারচার্জ দিতে হয়। এমসিসিআই নীতিগতভাবে সারচার্জের বিরোধিতা করে যাচ্ছে। বিদ্যমান সারচার্জ অবমানবিক। তাই এমসিসিআই নিট সম্পদ ৫ কোটি পর্যন্ত সারচার্জ মওকুফ অর্থাৎ শূন্য হার দাবি করছে। আর ৩০ কোটি টাকার অধিক সম্পদের ক্ষেত্রে সারচার্জ ২০ শতাংশ এবং আর ন্যূনতম ৩ হাজার টাকা সারচার্জের বিধান তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
এমসিসিআইর সহসভাপতি গোলাম মহিউদ্দিন বলেন, বৃহৎ করদাতা ইউনিটের (এলটিইউ) ৮০ ভাগ করদাতা এ সংগঠনের সদস্য। রাজস্ব বৃদ্ধিতে নতুন মূসক আইন পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা হবে। চলমান অর্থনৈতিক সংকট নিরসনে সরকার একটি গ্রহণযোগ্য বাজেট ঘোষণা করবে।
স্থানীয় শিল্পে করবৈষম্য দূর করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মৌলিক কাঁচামাল ও মধ্যবর্তী পণ্যের ওপর কর হ্রাস করা হলে দেশীয় শিল্প প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়বে। তিনি আয়করে ২৩, মূসকে ১৪ ও শুল্কে ৩২টি প্রস্তাব দেন।
এ ছাড়া এমসিসিআই আয়কর বিষয়ে ২৩টি প্রস্তাব, মূসক ও সম্পূরক শুল্ক আইন বিষয় ২৯টি প্রস্তাব উপস্থাপন করে প্রাক বাজেট আলোচনায়।
সভাপতির বক্তব্যে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, নতুন ভ্যাট আইনের বিষয়ে এমসিসিআইর ইতিবাচক মনোভাবকে আমরা সাধুবাদ জানাই। নতুন ভ্যাট আইন আগামী ১ জুলাই কার্যকর হচ্ছে। এমসিসিআই আমাদের অন্যতম বৃহৎ অংশীদার।
তিনি বলেন, আমি আজ বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ) পরিদর্শন করেছি। আমি সেখানে আমাদের সহকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছি, ভালো করদাতাকে সহযোগিতা ও লালন করতে হবে। তারা আমাদের কাছে সম্মানিত করদাতা। তাদের সমস্যা সমাধানে ভিন্নভাবে দেখা হবে। আমরা সকলকে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।
করনেট বৃদ্ধিতে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী জনগণের ওপর করের বোঝা বাড়িয়ে করনেট বৃদ্ধি করার কাজ করছি। শুধু ব্যবসায়ী, শিল্পপতি নয়, করযোগ্য সবাইকে করের আওতায় নিয়ে আসতে এনবিআর কাজ করছে।
প্রাক-বাজেট আলোচনায় বিসিআই ও এমসিসিআইর বিভিন্ন সদস্য, এনবিআরের সদস্য ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।