নিউজ ডেস্ক:
সরকারের সুদ ব্যয় বেড়েছে। ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরের চেয়ে ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে এ ব্যয় বেড়েছে ১৫ শতাংশ।
২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ঋণের সুদ বাবদ সরকারের ব্যয় হয়েছে ৩২ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংকিং খাত থেকে নেওয়া ঋণের সুদ ১৪ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র থেকে গৃহীত ঋণের ওপর সুদ বাবদ ব্যয় হয়েছে ১৬ হাজার ৪৬ কোটি টাকা। আর বিদেশি উৎস থেকে গৃহীত ঋণের ওপর সুদ বাবদ ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা।
সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত ক্যাশ অ্যান্ড ডেট ম্যানেজমেন্ট কমিটির বৈঠকে এসব তথ্য তুলে ধরা হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, গত অর্থবছরে অর্থাৎ ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের বাজেটে নির্ধারিত নিট ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৯৩ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে নিট ঋণ নেওয়া হয়েছে ৬২ হাজার ৭৯৫ কোটি টাকা, যার মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণের পরিমাণ ৫২ হাজার ১৩ কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের পরিমাণ ১০ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা। এটি গত অর্থবছরের বাজেটের ৬৭ শতাংশ। এ সময় অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে নেওয়া ঋণের মধ্যে ব্যাংকিং খাত থেকে নেওয়া ঋণের সুদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা। এটি এর আগের অর্থবছর অর্থাৎ ২০১৫-১৬ অর্থবছরের তুলনায় ৬ শতাংশ কম। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সুদ ব্যয় ছিল ১৫ হাজার ৬৬৪ কোটি টাকা।
মূলত ট্রেজারি সিকিউরিটিজের ইয়েলড হারের নিম্নগতি এবং এ খাত থেকে ঋণাত্মক ঋণ নেওয়ার কারণে ঋণের স্থিতি ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরের তুলনায় কমে যাওয়ায় ব্যাংকিং খাতের ঋণ সুদ ব্যয় কমেছে।
২০১৬-২০১৭ অর্থবছর জাতীয় সঞ্চয় প্রকল্পগুলো থেকে গৃহীত ঋণের ওপর সুদ বাবদ ব্যয় হয়েছে ১৬ হাজার ৪৬ কোটি টাকা, যা ২০১৫-১৬ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ হাজার ১৫১ কোটি টাকা বা ৪৪ শতাংশ বেশি। জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের অস্বাভাবিক বিক্রি বাড়াই এর মূল কারণ।
সূত্র জানায়, ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে বিদেশি উৎস থেকে গৃহীত ঋণের ওপর সুদ বাবদ ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা, যা বরাদ্দের ৯৪ শতাংশ। এ ব্যয় ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেড়েছে। এ সুদ ব্যয় নির্ধারণে সাধারণত বিনিময় হারের প্রভাব থাকে। ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে টাকার বিনিময় হার মার্কিন ডলারের বিপরীতে এর আগের অর্থবছরের তুলনায় কম ছিল। ফলে এটি বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় বাড়ার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বৈঠকে বলা হয়, সরকারের সুদ ব্যয় বাড়ার অন্যতম কারণ হলো জাতীয় সঞ্চয়পত্রের সুদ ব্যয় বৃদ্ধি। সঞ্চয়পত্রের কারণেই সরকারের ঋণ ব্যবস্থাপনা ও নগদ ব্যবস্থাপনায় চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। তবে সঞ্চয়পত্রের একটি আর্থসামাজিক প্রভাব রয়েছে। এটি ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক বিনিয়োগকারীদের আর্থিক সুরক্ষা দিয়ে থাকে। পাশাপাশি এটি সরকারের জন্য একটি স্পর্শকাতর বিষয়। তাই এ সংক্রান্ত নীতি সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সার্বিক দিক পর্যালোচনা করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে বৈঠকে আলোচনা করা হয়।