নিউজ ডেস্ক:
নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় বেসরকারি একটি টেলিভিশনের জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
প্রশ্ন: ইসলামে দত্তক নেওয়ার বিধান আছে কি? থাকলে উত্তরাধিকারের নিয়ম কী?
উত্তর: ইসলামে দত্তক নেওয়া হারাম, দত্তক নেওয়া জায়েজ নেই। মানুষকে আপনি দয়া করে তাঁকে লালন-পালন করতে পারেন, কিন্তু সন্তান দত্তক নেওয়া জায়েজ নেই, এটা হিন্দুদের মধ্যে আছে। এটা কখনো ইসলামে নেই। ইসলামে দত্তক নিলে সে কোনো ওয়ারিশ হবে না, কোনো কিছুই পাবে না।
দত্তক নেওয়া তো জায়েজ নেই, বরং কোনো মানুষকে যদি আপনি লালন-পালন করেন, যে আপনার পরিবারভুক্ত নয়, সন্তান নয়, তাঁর জন্য আপনি কিছু দান করতে পারেন, সদকা করতে পারেন। তাঁকে উত্তরাধিকার আইনের মধ্যে নিয়ে আসা যাবে না। সে আপনার কোনো সন্তানের মর্যাদা পাবে না এবং কোনো ওয়ারিশ হবে না। এটাই মূল কথা।
কোরআনে কারিমে আল্লাহতায়ালা এই দত্তকপ্রথা নিষেধ করার জন্য সরাসরি তাঁর নবীকে দিয়ে একটি বিরাট কাজ করিয়েছেন। সেটা হচ্ছে, জায়েদ ইবনে হারজ, যাকে বলা হতো জায়েদ ইবনে মুহাম্মদ, অর্থাৎ মুহাম্মদের ছেলে জায়েদ। সেটা বন্ধ করার জন্য আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘যাদের তোমরা সন্তান বলে ডাকো, তারা তোমাদের সন্তান নয়।’
সরাসরি আল্লাহতায়ালা নিষেধ করে দিয়েছেন সূরা আহজাবে। এর পর আল্লাহতায়ালা বলেছেন, এগুলো তোমাদের মুখের কথা, আল্লাহ সঠিক কথা বলেন। অর্থাৎ দত্তক নেওয়া কোনোভাবেই জায়েজ নেই। এ জন্য জাহেলি যুগে নবী (সা.) যাঁকে লালন-পালন করেছেন, আল্লাহতায়ালার নির্দেশে তাঁর স্ত্রীকে তিনি বিয়ে করে দেখিয়ে দিয়েছেন। আল্লাহতায়ালা বলে দিয়েছেন, ‘যাদের তারা নিজের সন্তান বলে ডাকে, তাদের স্ত্রীকে বিয়ে করা হারাম নয়, হালাল। এটা প্রমাণ করার জন্য আল্লাহতায়ালা তাঁর স্ত্রীকে, অর্থাৎ জায়নাবকে বিয়ে দিয়েছেন মুহাম্মদ (সা.)-এর সঙ্গে। সুতরাং ইসলামে দত্তকের কোনো সুযোগ নেই।