এম এস হাবিবুর রহমান। তিনি একজন ব্যবসায়ী এবং এলাকার জনপ্রতিনিধি। ব্যবসা ও রাজনীতির সূত্রে বহু মানুষের সঙ্গে তার সম্পর্ক। সম্প্রতি তিনি সন্তানের বাবা হয়েছেন। তিনি সন্তানের আকিকা অনুষ্ঠান করতে চান। অথচ পরিচিত ও ঘনিষ্ঠ সব লোককে এক অনুষ্ঠানে আপ্যায়ন করা কঠিন। তাই তিনি একাধিক আকিকা অনুষ্ঠান করতে চান। তাঁর প্রশ্ন হলো, একাধিক আকিকা অনুষ্ঠান করা অবকাশ কি ইসলামে আছে?
প্রাজ্ঞ আলেমরা বলেন, শিশু জন্মের পর আকিকা (পশু কোরবানি) দেওয়া সুন্নত। এটা একটি ইবাদতও বটে। আকিকার মাধ্যমে মা-বাবা আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করে এবং সন্তানের জন্য কল্যাণকর জীবনের প্রার্থনা করে। ইসলামী শরিয়তের মূলনীতি হলো, ইবাদতগুলো ইবাদতের দৃষ্টিকোণ থেকে আদায় করা আবশ্যক। তাতে অনুষ্ঠান-আনুষ্ঠানিকতার ঠিক প্রবল হওয়া অনুচিত। কেননা তাতে ইবাদতের বরকত ও সুফল নষ্ট হয়ে যায় এবং নানা ধরনের ফেতনার জন্ম নেয়। আকিকার ক্ষেত্রে একই কথা প্রযোজ্য। তাই আকিকা আড়ম্বরপূর্ণ আনুষ্ঠানিকতায় না করে শোকর ও ইবাদতপূর্ণ পরিবেশে করা উত্তম।
এরপরও পারিপার্শ্বিক কারণে কারো যদি অধিক সংখ্যক লোককে আপ্যায়ন করতে হয়, তবে তা একাধিক পর্বে করার চেয়ে একাধিক পশুর মাধ্যমে করা উত্তম। ব্যক্তি ইসলামী রীতি অনুসারে ছেলে সন্তানের জন্য দুটি ছাগল এবং মেয়ে সন্তানের জন্য একটি ছাগল দিয়ে আকিকা করবে। আর মেহমানদারির জন্য পশুর সংখ্যা বৃদ্ধি করবে। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তি আকিকা ও মেহমানদারি উভয়টির সাওয়াব পাবে। হ্যাঁ, কেউ যদি একাধিক বার আকিকা করে, তবে প্রথমবার সুন্নত এবং পরবর্তীগুলো নফল বা মুস্তাহাব হিসেবে গণ্য হবে। শর্ত হলো, তা সামাজিক প্রথায় পরিণত হতে পারবে না। যদি তা সামাজিক প্রথায় পরিণত হয়, তবে তা বিদআত বলে গণ্য হবে।
মেহমানদের আপ্যায়নের জন্য ছাগল, খাসি বা ভেড়ার পরিবর্তে গরু, মহিষ বা উট দিয়েও আকিকা করার অবকাশ আছে। তবে উত্তম হলো খাসি বা ভেড়া দিয়ে আকিকা করা। কেননা রাসুলুল্লাহ (সা.) এমনটি করেছেন। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) হাসান ও হুসাইনের আকিকা জোড়া জোড়া ভেড়া জবাই করে দিয়েছিলেন। (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ৪২১৯)