কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা দাঁড়াল পাঁচে।
রোববার (৪ আগস্ট) সকালে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ক্ষমতাসীন দলের মত বিনিময় সভায় মিছিল নিয়ে হামলা করে আন্দোলনকারীরা।
তারা কার্যালয়ের ভেতরে থাকা অন্তত ৫০ জনের ওপর হামলা করে।
এতে সেখানে ছয়জন মারা যান বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ হাসান খান। এই ছয়জনের একজন ছিলেন দৈনিক খবরপত্র পত্রিকার রায়গঞ্জ প্রতিনিধি প্রদীপ কুমার ভৌমিক।
ঢাকায় বিকাল পৌনে ৪টার দিকে শাহবাগে আন্দোলনকারীদের তোপের মুখে পড়েন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের সিনিয়র রিপোর্টার শামীমা সুলতানা। তাকে বাঁচাতে গেলে আহত হন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মাসুম বিল্লাহ ও ফটো সাংবাদিক মাহমুদ জামান অভি। এসময় বণিক বার্তার সিনিয়র ফটো সাংবাদিক কাজী সালাউদ্দিন রাজু আহত হয়েছেন।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে ২৭ নম্বর সড়কে রাপা প্লাজার সামনে হামলার শিকার হন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার দুজন সাংবাদিক। তারা হলেন জাহিদুল ইসলাম ও মিরাজ হোসেন। জাহিদুল ইসলামের মাথা ফেটে গেলে হাসপাতালে নিয়ে পাঁচটি সেলাই দিতে হয়।
জিগাতলায় হামলার শিকার হন দৈনিক যায়যায়দিনের দুই সাংবাদিক নাহিদ হাসান ও আমিরুল ইসলাম। তাদের মারধর এবং মোবাইলসহ মাইক্রোফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়। উপস্থিত সাংবাদিকরা তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
ঢাকাসহ পাঁচ জেলায় একাত্তর টেলিভিশনের রিপোর্টার ও ক্যামেরাপারসন হামলার শিকার হন। রাজধানীর রামপুরা–সংলগ্ন হাতিরঝিল এলাকায় বেলা একটার দিকে বিক্ষোভকারীরা একাত্তর টিভির গাড়ি ভাঙচুর করেন। এ সময় একাত্তর টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার হাবিব রহমানের ওপর হামলা চালান বিক্ষোভকারীরা।
রাজধানীর উত্তরায় নিউজ টোয়েন্টিফোর চ্যানেলের দুই সাংবাদিক আহত হন। তাঁরা হলেন রিপোর্টার মোরসালীন জোনায়েদ ও ক্যামেরাপারসন মো. মুরাদ। প্রেস ক্লাব এলাকায় দৈনিক আমাদের সময়ের চিফ ফটো জার্নালিস্ট মেহেরাজ এবং আজকের দৈনিকের নুর হোসেন পিপুল আহত হয়েছেন।
বিক্ষোভ চলার সময় চাঁদপুরে একাত্তর টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি আল-আমিন ভূঁইয়া, পটুয়াখালী প্রতিনিধি আহসানুল কবির, সিলেট প্রতিনিধি হোসাইন আহমদ ও মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি জসীমউদ্দিন দেওয়ানকে মারধর করা হয়।
মানিকগঞ্জে হামলায় গুরুতর আহত হন ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি আর এস মঞ্জুর রহমান, এটিএন বাংলার জেলা প্রতিনিধি শহিদুল ইসলাম ও আমার নিউজ পত্রিকার সাংবাদিক দেওয়ান সাদমান। আহত তিনজনকে উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ছাড়া সিলেটে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় তিন সাংবাদিক আহত হন।
ঠাকুরগাঁওয়ে বের হওয়া বিক্ষোভ মিছিল থেকে প্রথম আলোর ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি মজিবর রহমান খানের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা তাঁর পিঠে ছুরিকাঘাতের পাশাপাশি লাঠি ও রড দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করেন। বেলা দেড়টার দিকে ঠাকুরগাঁও শহরের জজ কোর্টের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
সিলেটে একাত্তর টেলিভিশনের প্রতিনিধি হোসাইন আহমদ সুজন ও তার ক্যামেরা পারসনকে মারধর করে তাদের সঙ্গে থাকা ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়।
এছাড়া রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় সংঘর্ষের সময় অনেক সাংবাদিক আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।