নিউজ ডেস্ক:
নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে সৃষ্ট সংকট নিরসনে সংলাপের জন্য আওয়ামী লীগের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত সমঝোতার চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ।
গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠনে জাতীয় সংলাপের প্রয়োজনীয়তা শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দল এ বৈঠকের আয়োজন করে।
বৈঠকে মওদুদ বলেন, রাজনৈতিক ইস্যুর সমাধান রাজনৈতিকভাবেই করতে হবে। আর এর জন্য ক্ষমতাসীন সরকারকে নিজে থেকে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি অারও বলেন, আওয়ামী লীগ যদি সমঝোতায় না আসে তাহলে হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্রকে ফিরে পাওয়ার জন্য খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। এছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই।
বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়ন করছে সেটি ঠিক। কিন্তু অবকাঠামোগত উন্নয়নই কি সবকিছু? যখন যে সরকারই আসুক না কেন প্রয়োজনের তাগিদে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে। কিন্তু উন্নয়নের যে সংজ্ঞা কি শুধু ফ্লাইওভার, সেতু নির্মাণ? যদি এসবই হতো তাহলে তো আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার কোনো দরকার ছিল না। তিনি তো অনেক উন্নয়ন করেছিলেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে এত বৃহৎ আন্দোলন কেন হয়েছিল?
তিনি আরও বলেন, সরকার আসবে, সরকার যাবে। কিন্তু তাদের উন্নয়নকে কেউ ততটা স্মরণ করবে না। যতটা স্মরণ করা হবে তাদের মূল্যবোধকে। তাই আমাদের ভেবে দেখা উচিত, শুধু উন্নয়ন নয়, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য কি মূল্যবোধ রেখে যাচ্ছি সেটি একবার ভেবে দেখা।
গণতন্ত্রের চর্চা না থাকলে কোনো উন্নয়নই টেকসই হবে না বলেও মন্তব্য করেন মওদুদ আহমদ।
তিনি বলেন, একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়ার জন্য জামায়াতকে নিয়ে আন্দোলন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু এখন তিনি বলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার কখনো দেশের মানুষ গ্রহণ করবে না।
সার্চ কমিটি প্রসঙ্গে মওদুদ বলেন, আশা করি, নির্বাচন কমিশনার হিসেবে গঠনের জন্য অতীতে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না, সরকারের কোনো লাভজনক আসনে আসীন হননি ও অবসরপ্রাপ্ত নিরপেক্ষ এমন কাউকে সার্চ কমিটি সুপারিশ করবে।
তিনি আরও বলেন, রামপাল বর্তমানে বৈশ্বিক ইস্যু। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে পরিবেশে যে ক্ষতি হবে সে ব্যাপারে সারাদেশে মানুষ উদ্বিগ্ন। কিন্তু সে প্রকল্প বাতিলের দাবিতে যখন মানুষ আন্দোলনে নামে সেখানে পুলিশ হামলা করে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- সাংস্কৃতিক দলের সভাপতি হুমায়ুন কবির বেপারী, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, এনপিপির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদ প্রমুখ।