জাহিদুর রহমান তারিক,ঝিনাইদহঃ
আসন্ন রমজানকে সামনে রেখে ঝিনাইদহের শৈলকুপায় মিষ্টির পঁচা রস সংগ্রহ করে তা দিয়ে কৃত্তিম উপায়ে গুড় তৈরী করা হচ্ছে। যা মানব দেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। কৃত্তিম উপায়ে তৈরী এসকল বিষাক্ত গুড় ও পাটালী উপজেলাসহ আশপাশ এলাকায় বাজারজাত করা হচ্ছে। ধোকা দেওয়া হচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের। এসকল গুড় খেয়ে অনেকের পেটে সমস্যা হলেও আসল রোগ নির্নয় হচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে এ কাজ করে চলেছেন উপজেলার বগুড়া ইউনিয়নের আলফাপুর গ্রামের সুশীল কুন্ডু। তিনি তার বসতবাড়ীতেই এ অবৈধ কারখানা বসিয়ে স্ত্রীকে সাথে নিয়েই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। সরেজমিনে দেখা যায়, আলফাপুর গ্রামের চান মিয়ার প্রতিবেশী সুশীল কুন্ডু দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন মিষ্টির দোকান ও কারখানা থেকে মিষ্টির পরিত্যাক্ত রস সংগ্রহ করেন। এরপর তা বাড়ীতে এনে বড় বড় ৫/৬টি প্লাস্টিক ড্রামে করে দীর্ঘদিন মুখ আটকে রেখে পঁচানো হচ্ছে। এছাড়াও তার সংগ্রহে পুরাতন পঁচা গুড়ও রয়েছে। যে গুড়ের মধ্যে বিভিন্ন রকমের পোকা-মাকড় ও মাছি মরে পঁচে আছে। আর এই পুরাতন পঁচা গুড়ের সাথে মিষ্টির পঁচা রস, চিনি ও বিষাক্ত মেডিসিন মিশ্রন করে আগুনে জ্বালিয়ে তৈরী করা হচ্ছে বিভিন্ন রকম পাটালি ও খেজুরে গুড়। তৈরীর পর যা দেখলে মনে হবে এদকম আসল। এসকল পন্য বাজারজাতের উদ্দেশ্যে পাতিলজাত করার পর কোনটা আসল আর কোনটা কৃত্তিম উপায়ে তৈরী তা সাধারণ মানুষের ধরার ক্ষমতা নেই বললেই চলে। তৈরীকৃত এসকল গুড় মানব দেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর বলে জানা গেছে। গুড়ে জাল চলাকালীন কারখানার মালিক ও কারিগর সুশীলের সাথে কথা হলে তিনি জানান, এভাবে দীর্ঘদনি ধরে গুড় তৈরি করে আসছেন। এ বিষয়ে ক্রেতাদের কোনো অভিযোগ নেই। এই গুড় ও পাটালী শৈলকুপাসহ আশপাশ এলাকায় বিক্রি করে থাকেন। রমজানের মাসে গুড়ের চাহিদা বেশী থাকে। বিশেষ করে যখন অফ সিজেন তখন এই গুড়ের চাহিদা বাজারে বেশী থাকে। এ বছরের তৈরী করা গুড় আগামী বছরেও চালানো সম্ভব। কেননা কৃত্তিম উপায়ে তৈরী এসকল গুড় সহজে নষ্ট হয়না। তবে ওই সময় সুশীলকে গুড় খেতে বললে তিনি রেগে গিয়ে বলেন, হাজার টাকা দিলেও এ গুড় আমার দ্বারা খাওয়া সম্ভব নয়। স্থানীয়রা জানায়, সুশীল তার প্রতিবেশী এক মাতব্বরের সহযোগিতায় দীর্ঘদিন যাবৎ এই অপকর্ম করে আসছে। দ্রুত এই অবৈধ গুড় তৈরীর কারখানা উচ্ছেদ ও জড়িতদের শাস্তির দাবীতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।