বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে তিনজনকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে তিনটি এবং এক আইনজীবীকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। বুধবার (২৮ আগস্ট) ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. তোফাজ্জল হোসেনের আদালত খিলগাঁও থানার দুটি হত্যা মামলা এবং মুগদা থানার একটি হত্যাচেষ্টার মামলার আবেদনকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
এছাড়া ঢাকার সিনিয়ার জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের আদালত আশুলিয়া থানাকে একটি হত্যা মামলার আবেদন এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
রাজধানীর বনশ্রীতে গুলিতে মুদি দোকানি মিজানুর রহমান নিহতের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন বাবা কামাল হোসেন এ মামলা করেন।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন- ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, জুনাইদ আহমেদ পলক, শেখ ফজলে নূর তাপস, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, আমির হোসেন আমু, ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন, চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, হাবিবুর রহমান, সৈয়দ নুরুল ইসলাম, হারুন-অর-রশিদ, বিপ্লব কুমার সরকার, সাদ্দাম হোসেন ও ব্যারিস্টার সাজ্জাদ হোসেন।
১৪ বছরের কিশোর আশিকুল ইসলাম গুলিতে নিহতের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে আরেকটা হত্যা মামলা করেছেন মা আরিশা আফরোজ। গত ১৯ জুলাই খিলগাঁও থানাধীন বনশ্রী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান আশিক। মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- আসাদুজ্জামান খান কামাল, চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, হারুন-অর-রশীদ, বিপ্লব কুমার সরকার।
আশুলিয়া থানার সামনে সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী মো. সাজ্জাদ হোসেন সজলকে গুলি করে হত্যার পর মরদেহ আগুন দিয়ে পোড়ানোর অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভাই মিজানুর রহমান। মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন-ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আবদুল্লাহ আল-মামুন, হারুন অর রশীদ, বিপ্লব কুমার সরকার, হাবিবুর রহমান।
রাজধানীর মুগদায় আবদুল বাছেদ শামীম নামে এক আইনজীবীকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫৯ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে আবদুল বাছেদ শামীম বাদী হয়ে মামলা করেন। আদালদ মুগদা থানা পুলিশকে অভিযোগটি তদন্তপূর্বক এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
এ মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন-ওবায়দুল কাদের, শেখ সেলিম, আসাদুজ্জামান খান কামাল, মাহাবুবউল আলম হানিফ, হাছান মাহমুদ, নাজমুল হাসান পাপন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দীপু মনি, বিপ্লব বড়ুয়া, আবদুস সোবহান গোলাপ, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, জুনাইদ আহমেদ পলক, শেখ ফজলে শামস পরশ, মাঈনুল হোসেন খান নিখিল, নায়ক ফেরদৌস আহমেদ, ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন, কাজী সালাউদ্দিন, ওয়াসার সাবেক এমডি তাকসিম এ খান, চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, হাবিবুর রহমান, ছাত্রলীগের সাদ্দাম হোসেন, শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, মাজহারুল কবীর শয়ন ও তানভীর হাসান সৈকত।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সময় গত ১৮ জুলাই আদালতের কার্যক্রম শেষ করে বাসায় ফিরছিলেন আবদুল বাছেদ শামীম। মানিকনগর পৌঁছালে আন্দোলনকারীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীর গুলি বর্ষণ করেন। এতে গুলিবিদ্ধ হন আবদুল বাছেদ।