বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ময়দাহাট্টা ইউনিয়নে একই স্কিমে দু’টি গভীর নলকূপ স্থাপন করায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। উপজেলা প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করেই আন্ডারগ্রাউন্ড পাইল লাইনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
জানা গেছে, উপজেলার ময়দানহাট্টা ইউনিয়নের হাটগাড়ী গ্রামের আবুল কালাম আজাদ উপজেলা সেচ কমিটির নিকট থেকে ২০১২ সালে হাটগাড়ী মৌজায় গভীর নলকূপের লাইসেন্স নিয়ে গভীর নলকূপ স্থাপন করে কৃষি জমিতে সেচ প্রদান করে আসছে। তার প্রতিবেশী প্রতিপক্ষ আইনুল হক ঈন্বার্ষন্বিত হয়ে কালামের স্কিমের মাত্র ৫০০ ফুট দূরে গভীর নলকূপ স্থাপন করেন এবং বিদ্যুৎ সংযোগ নেন।
আইনুল হক উপজেলা সেচ কমিটির নিকট থেকে লাইসেন্স না নিয়ে এবং অবৈধভাবে পেশি শক্তির মাধ্যমে গভীর নলকূপ স্থাপন করেছে বলে অভিযোগ উঠছে। শুধু তাই নয় প্রতিপক্ষ উপজেলা সেচ কমিটির লাইসেন্স স্বাক্ষর নকল করে ভুয়া লাইসেন্স প্রস্তুত করে বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন কৃষক জানিয়েছেন গত দুই বছর পূর্বে সৌর বিদ্যুৎ চালিত পাম্প থেকে জমিতে সেচ দিতেন তারা। কিন্তু কিছুদিন পূর্বে সৌর বিদ্যুৎ চালিত গভীর নলকূপটি বন্ধ হওয়ায় প্রতিপক্ষ আইনুল ও তার লোকজন পেশি শক্তির মাধ্যমে অবৈধভাবে কালামের স্কিমের মধ্যে গভীর নলকূপ স্থাপন করেছেন।
আলু মৌসুমে আইনুল হক আন্ডার গ্রাউন্ড পাইপ স্থাপন করতে থাকলে আবুল কালাম গত ২১ নভেম্বর২০২৪ এ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা থানা পুলিশকে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। কিন্তু একটি খুঁটির জোরে জোরপূর্বক আইনুল হক আন্ডার গ্রাউন্ডের পাইপের কাজ করে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে হাদিসুর রহমান নান্নু বলেন, আমার ভাই আবুল কালামের নামে বৈধ লাইসেন্স রয়েছে। কিন্তু প্রতিপক্ষরা পেশিশক্তির মাধ্যমে ভুয়া কাগজপত্র প্রস্তুত করে একই স্কিমের মধ্যে গভীর নলকূপ স্থাপন করেছেন। আমরা বাঁধা দিলেও আমাদেরকে পেশি শক্তির মাধ্যমে দমিয়ে রাখেন। প্রতিপক্ষরা প্রভাবশালী হওয়ার কারণে টাকা দিয়ে প্রশাসনসহ বিভিন্ন মহলের সাথে সংখ্যতা গড়ে তুলেছে। এমনকি তারা বিদ্যুৎ অফিসকে ভুল বুঝিয়ে একই স্কিমের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছে। তাদের কোনো গভীর নলকূপের লাইসেন্সের কাগজপত্র নেই। সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গেলে আইনুলের বাবা মোশারফ হোসেন বলেন, আমাদের নামে আরো ২টি লাইসেন্স রয়েছে। গভীর নলকূপের লাইসেন্স এর কাগজ দেখতে চাইলে তারা দেখাতে ব্যর্থ হয় এবং তারা উত্তেজিত হয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে অসদাচরণ করে।
শিবগঞ্জ উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, আইনুল হকের নামে গভীর নলকূপের কোন বৈধ লাইসেন্স নেই। তবে তিনি জানান ২০১২ সালে একটি লাইসেন্স ছিলো কিন্তু নবায়ন না করায় তা বাতিল হয়েছে।
আন্ডারগ্রাউন্ড পাইপ লাইন বন্ধকরণের বিষয়ে জানতে চাইলে শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং বলেন ব্যস্ত আছি।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, আমি অভিযোগ পেয়েছি এবং থানা পুলিশকে অবৈধ গভীর নলকূপ স্থাপন বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।