হামলার ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীরা হলেন, ইংরেজি বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী দেলোয়ার হোসেন, রসায়ন বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী আসাদুল্লাহ গালিব ও গণিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হাফিজুল ইসলাম। তাদের সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের অবমাননা করা হয়েছে দাবি করে রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ধীরে ধীরে ছাত্রী হলের অগ্রসর হতে থাকলে দুই থেকে তিন শ ছাত্রী এতে যোগ দেন। পরে মিছিলটি ছাত্রীদের আবাসিক হল হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে আসে। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘চাইতে গেলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’, ‘তুমি কে আমি কে/ রাজাকার, রাজাকার’, ‘মেধা না কোটা/ মেধা মেধা’সহ ইত্যাদি বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
ঠিক এই সময় বিপরীত দিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি খলিলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সজিবুর রহমানের নেতৃত্বে শতাধিক নেতা–কর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরাণ হল থেকে একটি মিছিল নিয়ে আসেন। তাঁরা স্লোগান দিচ্ছিলেন ‘আমার সোনার বাংলায় রাজাকারের ঠাঁই নাই’।
একপর্যায়ে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে দুই পক্ষ মুখোমুখি হয়। সেখানে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা মানবপ্রাচীর তৈরি করে কোটা আন্দোলনকারীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিতে দিতে ছাত্রলীগের বাধা উপেক্ষা করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করেন।
উক্ত হামলায় আহত শিক্ষার্থী আসাদুল্লাহ আল গালিব অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ মিছিল করছিলাম। এর মধ্যে আমরা খবর পাই, মিছিলে আসতে আগ্রহী হলের কিছু ভাইকে ছাত্রলীগ আসতে বাধা দিচ্ছে। তাই আবাসিক ছাত্র হল অভিমুখে গেলে পথিমধ্যে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা আমাদের মিছিলে বাধা দেয়। একপর্যায়ে তাঁরা হামলা করে। ’
তবে এই হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগের সভাপতি খলিলুর রহমান। তিনি বলেন, ‘হামলার এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। সবার কাছে ভিডিও ফুটেজ আছে, তা দেখলেই বুঝতে পারবেন। আমরা সড়কের পাশে গিয়ে তাঁদের যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. কামরুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে তা স্বাভাবিক হয়ে যায়। কেউ আহত হয়েছে কিনা, শিক্ষার্থীরা এমন কোনো বিষয়ে জানাননি। বর্তমানে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি শান্ত। ’