আলমডাঙ্গা জামায়াতে ইসলামীর ডাউকি ইউনিয়নের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টায় উপজেলা শহরের জিস্ টাওয়ারের কমিউনিটি সেন্টারে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ডাউকি ইউনিয়ন জামায়াতের আমির সজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতের আমির অ্যাড. রুহুল আমিন। এসময় তিনি বলেন, কয়েক দফায় বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীকে নিষিদ্ধ করেছে বিগত স্বৈরাচার সরকার। কিন্তু নিষিদ্ধ করেও জামায়াতকে দামিয়ে রাখা যাইনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতার আসার পর কার্যত জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ সংগঠনে রুপান্তরিত করেছিল। আমরা দেখলাম দেশে আইন আছে, আদালত আছে, সেই আইন সংশোধন করে নিজেদের মত বিচার করে, জামায়াতের তৎকালীন সহকারী সেক্রেটারী আব্দুল কাদের ভাইকে ফাঁসি দেওয়া হলো। আমরা আরও দেখলাম, জামায়াত ও ইসলামী ছাত্রশিবির আত্মগঠনমুলক কোন কর্মসূচী পালন করলে গায়েবি মামলা দিয়ে দিনের দিনের পর কারাগারে আটক রেখেছিল। এতো অত্যাচার করেও জামায়াতকে থামানো যায়নি, কয়েকগুণ শক্তি সঞ্চার করে সাধারন মানুষের পাশে থেকেছে এই দলটি। ইসলামী ঐক্যমতের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা জামায়াতের কর্মীদের মধ্যে ভয় লোভ কাজ করে না। এজন্য জামায়াতের কর্মীদের কেউ দুর্বল করতেও পারে না। আগামীতে স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে জামায়াতের কর্মীরা হাল ধরবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
জেলা আমির আরও বলেন, সন্তান সম্ভাবনা মা-বোনদের তারা কারাগারে নিক্ষেপ করেছে। অনেক ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করে দিয়ে ১৪৪ জারী করেছে আওয়ামী লীগ। আমরা জামায়াতের কর্মীদের কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করতে চাই, এতো নির্যাতনের পরও কেউ বলেননি, আমরা আর সংগঠন করবো না। ওরা (আওয়ামী লীগ) আমাদের ছেলেদের পঙ্গু করে দিয়েছে, মায়ের সামনে ছেলের চোখ উপড়িয়ে ফেলেছে, ইসলামী বিশ^বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র মোকাদ্দেস ও ওয়ালিউল্লাকে আজও সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবুও কেউ জামায়াত ইসলাম ছেড়ে যায়নি। এখানে অন্যান্য দলগুলোর সাথে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পার্থক্য। রক্ত ও চোখের পানি দিয়ে জামায়াতের নাম লেখা। তাই চাইলেও জামায়াতের ইতিহাস মুছে দিতে পারবে না।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের জেলা সেক্রেটারী আসাদুজ্জামান বলেন, সরকার পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু লুটতরাজ বন্ধ হয়নি। তিনি বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষি বিভাগের উদ্যোগে ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রণোদনার কার্যক্রমে অনিয়ম হচ্ছে। এগুলো প্রকৃত হকদারদের মধ্যে বিতরণের দায়িত্ব জামায়াত কর্মীকে নিতে হবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন আলমডাঙ্গা উপজেলা জামায়াতের আমীর দারুস সালাম, গাংনী-আসমানখালী শাখার আমীর আব্বাস উদ্দিন, পৌর জামায়াতের আমীর মাহের আলী, উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ইউসুফ আলী মাস্টার, আলমডাঙ্গা উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারী মামুন রেজা, আলমডাঙ্গা পৌর জামায়াতের সেক্রেটারী মসলেম উদ্দিন, পৌর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী নুর মোহাম্মদ হুসাইন টিপু, উপজেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী প্রভাষক শফিউল আলম বকুল, ছাত্রশিবিরের সাবেক জেলা সভাপতি তরিকুল ইসলাম।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন, জামায়াতের উপজেলা অফিস সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, প্রশিক্ষণ সম্পাদক বেলাল হুসাইন, ডাউকি ইউনিয়নের সাবেক আমীর আব্দুল মান্নান, ইউনিয়ন জামায়াতের আমীরদের মধ্যে আশাদুল হক, আলমডাঙ্গা প্রচার বিভাগের সভাপতি আমান উদ্দিন, শফিউজ্জমান মিঠু, ফজলুল হক, আব্দুল আজিজ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির আলমডাঙ্গা পৌর শাখার সভাপতি আক্তারুজ্জামান, উপজেলা শাখার সভাপতি রবিউল ইসলাম প্রমুখ। ডাউকি ইউনিয়ন শাখার সেক্রেটারী আব্দুস সালাম উপস্থাপনা করেন।