বেলাল আহমদ,লামা(বান্দরবান )প্রতিনিধি : বান্দরবানের লামায় এক মাত্র সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকটে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। শিক্ষক সংকট নিয়ে এলাকাবাসি অসংখ্যবার মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করলেও কোন প্রতিকার না পেয়ে হতাশ অভিভাবক মহল ও শিক্ষার্থীরা। লামায় মাধ্যমিক পর্যায়ের সবচেয়ে প্রাচীন ও বৃহৎ এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি শুধু শিক্ষক সংকটের কারণে হারাতে বসেছে তার গৌরবোজ্জল ইতিহাস।
জানা গেছে, লামা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ২৭জন শিক্ষকের পদ থাকলেও কর্মরত আছে মাত্র ৮জন। শূন্য পদ রয়েছে ১৯টি। এই স্কুলে বর্তমানে ১জন প্রধান শিক্ষকসহ গণিত বিভাগ, ভৌতবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞানে ২জন করে, বাংলায় ৩জন, ইংরেজির ৪ জন, ব্যবসায়ী শিক্ষায় ১, সামাজিক বিজ্ঞান, ভূগোল, কৃষি ও চারুকলা বিভাগে ১জন করে মোট ১৯জন শিক্ষকের পদ খালি রয়েছে।
বিদ্যালয়টিতে কোন মতে জোড়াতালি দিয়ে চলছে পাঠদান। স্থানীয় অভিভাবকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট থাকায় শিক্ষার্থীরা যথাযথ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। নামেই সরকারি বিদ্যালয় কিন্তুু লেখাপড়ার মানের দিক দিয়ে বেসরকারি বিদ্যালয়ের চেয়েও অনেক নিচে।
বিদ্যালয়ের কর্মরত কয়েকজন শিক্ষক প্রতিবেদককে জানান, শিক্ষক সংকটের কারণে স্কুলে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়। প্রতিদিন একজন শিক্ষককে পর পর একাধিক ক্লাস নিতে হয়। এতে শিক্ষার মান স্বাভাবিকভাবেই কমে যায়। যার প্রভাব পড়ে শিক্ষার্থীদের উপর। যেভাবেই হোক দ্রুত শূন্য শিক্ষকদের পদগুলো পূর্ণ করার জন্য জেলা পরিষদসহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতি দাবী জানান তারা।
লামা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস শিক্ষক সংকটের কথা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, স্থানীয় প্রশাসন ও জেলা পরিষদের সাথে কথা হয়েছে। দ্রুত এই সংকট নিরসন করা হবে।
এদিকে ২০১৪ সালের ২৬ মে সরকারের সাথে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের মধ্যে চুক্তি সম্পাদনের মধ্য দিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা কার্যক্রম হস্তান্তরিত হয়। তখনও লামা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকটজনিত কারণে শিক্ষা কার্যক্রমের নাজুক পরিস্থিতি দেখা মেলে। অপরদিকে যখন তখন শিক্ষক বদলির কারণে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে মনে করছেন লামার সচেতন অভিভাবক গন।
বান্দরবান জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সোমা রাণী বড়ুয়া শিক্ষক সংকটের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, লামা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদ পূরণের বিষয়টি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও আঞ্চলিক উপ-পরিচালক মহোদয় অবগত আছেন। তবে স্কুলে কর্মরত শিক্ষকদের অন্তত তিন বছর বাধ্যতামূলক একই কর্মস্থলে রাখা গেলে এ সংকট কাটিয়ে উঠার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক উপ পরিচালক গাজী গোলাম মাওলা বলেন, ‘শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় স্বাভাবিকভাবে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়া স্বাভাবিক। আমরা বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন মহলের সাথে কথা বলেছি। ইতিমধ্যে লামার কোন বিদ্যালয়ে কত পদ শূন্য রয়েছে সেই তালিকাও পাঠানো হয়েছে।