বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫
বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫

লামা উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি সরইতে নির্মিত হচ্ছে ১০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল

মো: ফরিদ উদ্দিন, লামা প্রতিনিধি: অবশেষে বান্দরবানের লামা উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি সরই ইউনিয়নে নির্মিত হচ্ছে ১০ শয্যা মা ও শিশু কল্যাণ হাসপাতাল। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবীর প্রেক্ষিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি’র একান্ত প্রচেষ্টায় স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (এইচইডি) হাসপাতালটি নির্মাণ করছে। ইতিমধ্যে নির্মানাধীণ কাজের ৬০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। হাসপাতালটির কাজ সম্পন্ন হলে ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি এলাকার প্রায় ২৪ হাজার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি ও বাঙ্গালী মানুষ স্বাস্থ্য সেবা পাবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে টেন্ডারের মাধ্যমে বান্দরবানের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা ১০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের নির্মাণ কাজটি পায়। ৪ কোটি ৪ লক্ষ টাকার চুক্তিমূল্যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কাজটি সম্পাদন করছেন বান্দরবানের ঠিকাদার মোজাফফর আহমদ ও ইমতিয়াজ। কাজের মধ্যে রয়েছে ১০ শয্যা হাসপাতাল ভবন, একটি স্টাফ কোয়ার্টার ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ। বিশিষ্ট সমাজ সেবক মোয়াজ্জেম হোসেন খাঁন হাসপাতালটি নির্মাণের জন্য ৪৫ শতক জমি দান করেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রাণয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি ২০১৭ সালের ২৫ মে হাসপাতালটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল হালিম মেম্বার, আবদুল মালেক, মো. সেলিম উদ্দিন, মো.আজাদ,দেওয়ান্দর তংচংঙ্গ্যা, অংসি প্রু মার্মা বলেন, সরই ইউনিয়নটির দুরত্ব উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২৩ কিলোমিটার। এখানে কোন সরকারী কিংবা বেসরকারী কোন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেই। তাই স্থানীয়রা অসুস্থ হয়ে পড়লে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া কিংবা দুর্গম পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে উপজেলা সদরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হত। দুর্গম পথ পাড়ি দিতে অনেক সময় রোগির অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। হাসপাতালটি নির্মিত হলে রোগী নিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হবেনা।
স্থানীয় আওয়ামীলীগ সভাপতি ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. ইদ্রিস কোম্পনী বলেন, প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি মহোদয়ের একান্ত প্রচেষ্ঠায় হাসপাতালটি নির্মান করা হচ্ছে। এ জন্য আমরা সরই বাসির পক্ষ থেকে মন্ত্রী মহোদয়কে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। তিনি আরও বলেন, নির্মাণ কাজ ভালো ভাবে চলছে। কাজের মান নিয়ে আমাদের কোন অভিযোগ নেই।
হাসপাতালের জমিদাতা মোয়াজ্জেম হোসেন খাঁন বলেন, আমি সরই মানুষের জন্য ৪৫শতক জমি ক্রয় করে দিয়েছি। এর কারন স্থানীয়ভাবে কোন হাসপাতাল না থাকায় এলাকার মানুষকে বহু কষ্টে লামা উপজেলা সদর কিংবা লোহাগাড়া উপজেলায় গিয়ে চিকিৎসা নিতে হয়। মা ও শিশুদের কল্যানে যেহেতু হাসপাতালটি হচ্ছে তাতে এলাকার শিশুরা নিরাপদ হবে। পাশাপাশি সরই এলাকার পাহাড়ী বাঙ্গালীরা সম্প্রদায়ের লোকজন সেবা পাবে।
নির্মাণ কাজের ম্যানেজার,মো. সাইফুল ইসলাম জানায়, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী মো. মোরশেদ আলম নিয়মিত নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করছেন। নির্মাণ কাজের কংকর, রড, সিমেন্ট ও বালু কার্যাদেশ মোতাবেক দেয়া হচ্ছে। ঠিকাদার মোজাফফর আহমদ ও ইমতিয়াজ বলেন, নির্মাণ কাজের শুরুতেই আমাদেরকে সহযোগিতা করায় এলাকাবাসীকে ধন্যবাদ জানাই। ইতিমধ্যে নির্মাণ কাজের ৬০ ভাগ শেষ হয়েছে। আশা করি সময় সীমার আগেই কাজ শেষ করতে পারবো।
নির্মাণকাজে দায়িত্বরত সহকারী প্রকৌশলী মো. মোর্শেদ আলম বলেন, কাজটি সুন্দর ভাবে করা হচ্ছে। আশা করি আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার পর কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দিতে পারবো।
সরই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফরিদ উল আলম জানান, দুর্গম পাহাড়ী এলাকার জনগনের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতালটি নির্মাণের উদ্যোগে নেন পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। হাসপাতালটি নির্মিত হলে ইউনিয়নবাসীকে স্বাস্থ্য সেবায় আর দুর্ভোগ পোহাতে হবেনা।

Similar Articles

Advertismentspot_img

Most Popular