লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ-লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের মেঘনা নদীর পাড়ের মাটি কেটে তৈরী করা হচ্ছে ইট। তীরের মাটি যাচ্ছে ভাটায় ভাটায়। একটি অসাধু চক্র নদীর তীর কেটে জেলার বিভিন্ন ইটভাটায় নিচ্ছে এই মাটি।
প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে মেঘানপাড়ের মাটি কাটা। এ যেন মাটি কাটার মহোসৎব।
নদীর তীর কেটে নেওয়ায় ভাঙন বেড়ে আরও হুমকির পড়ছে বিশাল এলাকা; প্রশস্ত হচ্ছে নদী। যে কারণে ক্ষতির মুখে পড়তে পারে মেঘনার তীর রক্ষা বাঁধ। এমন পরিস্থিতিতে এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে। বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার চর কালকিনি ইউনিয়নের নবীগঞ্জ এলাকায় সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় প্রায় অর্ধশত শ্রমিক নদীর তীর ঘেষে মাটি কেটে ১০/১২টি ট্রাক্টরট্রলি বোঝাই করে মাটি নিচ্ছে। এভাবেই গত কয়েকদিন থেকে অব্যাহতভাবে মাটি কেটেনিতে দেখা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কমলনগর ও লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি ইটভাটার মালিক দালালদের মাধ্যমে স্থানীয় জমির মালিকদেরকে মাটি বিক্রির জন্য প্রলুদ্ধ করছে। নদীতে জমি ভেঙ্গে যাবে এই আতঙ্ক ছড়িয়ে নামমাত্র টাকা দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে নদীর তীরের মাটি।
এলাকাবাসী জানায়, কমলনগর নদীভাঙন কবলিত এলাকা। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে এভাবে মাটি কেটে নিতে থাকলে ভাঙন আরও বাড়বে। বিলীন হবে বিস্তীর্ণ জনপদ। হুমকির মুখে পড়বে হাজার হাজার পরিবার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, নদীর তীর রক্ষা বাঁধের মাত্র দুই কিলোমিটার উত্তর পাশ থেকে মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে। যে কারণে শুষ্ক মৌসুমেও নদী ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।
কমলনগর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ওমর ফারুক সাগর বলেন, ইচ্ছে করে কেউ মাটি কেটে জমির শ্রেণি পরিবর্তন করতে পারে না। কেউ যাতে নদীর তীর থেকে মাটি কাটতে না পারে সে ব্যাপারে আমরা তৎপর থাকবো।
কমলনগর উপজেলা চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বাপ্পি বলেন, একটি চক্র জমির মালিকদের ভুল বুঝিয়ে মাটি কিনে ইটের ভাটায় দিচ্ছে। এতে হুমকির মুখে পড়ছে কমলনগর। এব্যাপারে স্থানীয়দের সচেতন হতে হবে। এদিকে যারা মাটি ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত তাদের ব্যাপারে প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, এব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।