নিউজ ডেস্ক:
মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের সেদেশে স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
আগামী নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ থেকে এ প্রত্যাবাসন শুরু হবে।
বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন ডিসিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি মুখপাত্র রবার্ট পলাডিনহো বলেন, ‘দায়ীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে আমাদের প্রচেষ্টার পাশাপাশি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি যাতে স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন হয়।’ বার্তা সংস্থা ইউএনবি এ তথ্য দিয়েছে।
রবার্ট পলাডিনহো বলেন, ‘এটি গুরুত্বপূর্ণ যে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবস্থার উন্নতি করতে সচেষ্ট থাকতে হবে এবং এর জন্য দায়ী সকলকে জবাবদিহির আওতায় নিতে বিভিন্ন পদক্ষেপের ওপর দৃষ্টি রাখতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য মানুষের দুর্দশার কারণ, দ্বন্দ্ব, সহিংসতা, এবং অপব্যবহারের মূল কারণগুলো খুঁজে বের করে মোকাবেলা করা।’
জানা যায়, আগামী মধ্য নভেম্বরে প্রথম ধাপে ৪৮৫টি পরিবারের দুই হাজার ২৬০ জন রোহিঙ্গা মাতৃভূমিতে প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সম্মত হয়েছে।
মিয়ানমার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পার্মানেন্ট সেক্রেটারি মিয়ান্ট থু জানান, তারা প্রায় পাঁচ হাজার রোহিঙ্গাকে যাচাই-বাছাই করেছেন।
বাংলাদেশে দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক শেষে গত বুধবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হকসহ দুই দেশের যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন।
তবে রোহিঙ্গারা বলছে, নাগরিকত্ব, গৃহসুবিধার পাশাপাশি তাদের মূল অধিকারগুলো পূরণ না হলে তারা মাতৃভূমি মিয়ানমারের রাখাইনে ফিরতে চান না।
এর আগে গত মঙ্গলবার ঢাকায় পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক শেষে আগামী মধ্য নভেম্বরে প্রথম ধাপের মাধ্যমে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার কথা জানা যায়।
গত বছরের ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী দ্বারা অত্যাচার নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার হয়ে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলা কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়।
শুরুতে মানবিক কারণে আশ্রয় দেওয়া হলেও রোহিঙ্গাদের জন্য অর্থনীতি ও পরিবেশের পাশাপাশি বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয় বাংলাদেশ।
এরপর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা তথা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশ এবং রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং মিয়ানমারের কঠোর সমালোচনা করে আসছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এই চাপের মুখেই মিয়ানমার তাদের নাগরিক রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে। তবে এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া কবে নাগাদ শেষ হতে পারে সে ব্যাপারে কোনো দেশের কাছে সুস্পষ্ট কিছু জানা না গেলেও এটি যে দীর্ঘ সময় লাগবে সে ব্যাপারে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।