এছাড়াও সংঘর্ষ হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট এলাকায়ও।
রাতেও ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা শহীদুল্লাহ হলের বাইরের অবস্থান নিয়ে ছিলেন। হলের ভেতরে কোটা আন্দোলনের সমর্থনে থাকা শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে ছিলেন।
দুই পক্ষকেই প্রতিপক্ষকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে দেখা গেছে। সন্ধ্যার দিকে সেখানে বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়েছে। ককটেলও নিক্ষেপ করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে গুলির খোসা দেখতে পেয়েছেন বিবিসির সংবাদদাতা আবুল কালাম আজাদ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এম মাকসুদুর রহমান হল প্রভোস্ট ও অন্যান্য শিক্ষকদের সাথে নিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন।
পরবর্তীতে সেখান থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সরে গেলে মিছিল নিয়ে শহীদ মিনারের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে আন্দোলনকারীরা।
কিন্তু পুলিশ নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের সেখানে যেতে দেয়নি। পরে কার্জন হলের সামনে ব্রিফিং করেন শিক্ষার্থীরা।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম মঙ্গলবার সারাদেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তাদের একদফা দাবির পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার ও আন্দোলনকারীদের উপর হামলার প্রতিবাদে এ কর্মসূচি বলে জানান তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. আব্দুল মতিন বিবিসি বাংলাকে জানান, আমরা শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করেছি। বহিরাগত এসে থাকলে সেটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার খোঁজ রাখা হচ্ছে।
এর আগে, শহীদুল্লাহ হলের প্রাধ্যক্ষ জাভেদ ইসলাম পাটোয়ারী হলের ফটকের সামনে গিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর হামলার নানা অভিযোগ জানিয়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেন।
মি. পাটোয়ারী বলেন, আমি শুধু শহীদুল্লাহ হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলব। যারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে, সোমবার দুপুরে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়ে সংঘাত। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ছাত্রলীগের হামলায় এখন পর্যন্ত দুইশ’রও বেশি শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলে দাবি করেছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ।
অন্যদিকে রাতে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন দাবি করেন তাদের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
সোমবার দুপুরে ও বিকালে হামলার সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে রড লাঠি হকিস্টিক দেখা যায়।
হেলমেট পরিহিত একদল তরুণকেও এ সময় আক্রমণাত্মক ভূমিকায় দেখা গেছে।
বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আহত অবস্থায় মেডিকেলের দিকে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।
উত্তেজনা চলাকালেই ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী ওয়াসিফ ইনান গণমাধ্যমে বলেন, রাজাকার স্লোগান দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কলঙ্কিত করা হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে ছাত্রলীগ তাদের প্রতিহত করেছে।
এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বহিরাগতদের কর্তৃক হলে হামলা ও ভাঙচুররের অভিযোগ করেন।
আন্দোলনকারীরা সরে পড়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় রড, লাঠি নিয়ে মিছিল করতে দেখা যায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের।