রসুনের উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। প্রতিদিন এক কোয়া রসুন খেলে আপনার স্বাস্থ্যের বেশ কিছু উন্নতি হতে পারে। চলুন নিম্নে জেনে নেই রসুনের ৫ উপকারিতা-
১. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়
রসুন পুষ্টিগুণে ভরপুর, যা আপনার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে পারে। এতে রয়েছে ভিটামিন সি, বি৬, ম্যাঙ্গানিজ ও সেলেনিয়াম।
এসব উপাদান ইমিউনিটি বাড়াতে অবদান রাখে। নিয়মিত রসুন খেলে সর্দি ও ফ্লু দূরে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ১৪৬ জনের ওপর চালানো এক গবেষণায় যাঁরা প্রতিদিন রসুনের সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করেন, তাঁদের ঠান্ডা-সর্দি লাগার হার ৬৩ শতাংশ কম।
২. রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে
উচ্চ রক্তচাপ এমন একটি রোগ, যেটি নিয়ন্ত্রণ না করলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি হতে পারে। রসুন উচ্চ রক্তচাপ খুব দারুণভাবে কমাতে পারে। কাঁচা রসুনের প্রধান রাসায়নিক উপাদান অ্যালিসিন, যা রক্তনালিগুলো শিথিল করতে ও রক্তপ্রবাহ উন্নত করতে সহায়তা করে।
৩. কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়
কাঁচা রসুন কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমাতে পারে। এটি টোটাল কোলেস্টেরল ও এলডিএল কোলেস্টেরল (যাকে ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল বলা হয়) কমাতে সাহায্য করে এবং সম্ভাব্যভাবে এইচডিএল কোলেস্টেরল (যাকে ‘ভালো’ কোলেস্টেরল বলা হয়) বাড়িয় দেয়।
৪. অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ করে
রসুনে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিভাইরাল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। রসুনে থাকা অ্যালিসিন বিভিন্ন রোগজীবাণুর বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা দেয়। এটি সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং অসুস্থতার তীব্রতা কমিয়ে দেয়। রসুনের অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্যগুলো খুবই কার্যকর। রসুন সালমোনেলা এবং ই. কোলাইয়ের মতো খাদ্যজনিত রোগজীবাণুগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে।
৫. বিষাক্ত বর্জ্য অপসারণে সাহায্য করে
রসুনের সালফার যৌগ শরীরকে টক্সিন (বিষাক্ত বর্জ্য) এবং ভারী ধাতু দূর করতে সাহায্য করে। রক্তে থাকা সিসার মাত্রাও কমাতে পারে রসুন। এর ডিটক্সিফাইংয়ের প্রভাবে গ্লুটাথিয়নের উৎপাদন বাড়ে। এটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা যকৃৎকে বিষাক্ত বর্জ্য অপসারণে সাহায্য করে।
কাঁচা রসুন খাওয়ার আগে যা মনে রাখবেন
কাঁচা রসুনের স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক বেশি হলেও খাওয়ার আগে কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে—
* রসুন কেটে ১০ মিনিট রেখে দিন। এ সময় রসুনের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান অ্যালিসিন তৈরি হয়। এই উপাদানই স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী।
* অনেকে কাঁচা রসুন খেতে পারেন না। তাঁরা এক চামচ মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। সালাদেও মিশিয়ে খেতে পারেন। অন্য খাবারের সঙ্গেও খাওয়া চলে।
* প্রথমে অল্প করে খেতে পারেন। অর্ধেক কোয়া দিয়ে শুরু করুন। এরপর এক কোয়া করে খান। এতে আপনার পাকস্থলি ও অন্ত্রে অস্বস্তি হবে না।