নিউজ ডেস্ক:
এখন তার একটি গানের প্রোমো মুক্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি দেখা ভিডিওর রেকর্ড গড়ে! সে রকমটাই জানাচ্ছে সালমান খান আর ক্যাটরিনা কাইফের নতুন ছবি ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’-এর প্রথম মুক্তি পাওয়া গান ‘সোয়্যাগ সে স্বাগত’। তা, ছবি যে এই অনুপাতে হিট হবেই, সে কথা না বললেও চলে।
সব সময় যে সালমানের দিন ভালো গেছে তা কিন্তু, নয়। জানলে অবাক হবেন, ভারতের এই জনপ্রিয় নায়কেরই ক্যারিয়ারের ১০টি ছবি সই করার পরেও মুক্তিই পায়নি। কেন, দেখে নেওয়া যাক এক এক করে!
১. নায়িকার রণ, মুক্তি ক্ষেত্র থেকে উধাও ছবি
সময়টা ১৯৮৯। সে বছরেই বলিউড পায় সালমান খানকে। ছবির নাম ‘ম্যায়নে পেয়ার কিয়া’। রাজশ্রী প্রোডাকশনের এই ছবি মুক্তির পরে শুধু যে সালমান খানই জনপ্রিয় হন, তা নন। জনপ্রিয়তার কোঠায় নাম থাকে নায়িকা ভাগ্যশ্রীরও। স্বাভাবিক ভাবেই এই জুটিকে নিয়ে ছবি তৈরিতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন প্রযোজকরা। সেই সময়ে ‘রণক্ষেত্র’ বলে একটি ছবি সই করেন সালমান আর ভাগ্যশ্রী।
কিন্তু শুটিং শুরুর মুখেই বিয়ের পিঁড়িতে বসে পড়েন নায়িকা। ফলে ছবির কাজ পিছিয়ে দিতে হয়। এরপর যখন জানান ভাগ্যশ্রী, তিনি স্বামী হিমালয় ছাড়া আর কারও সঙ্গে কাজ করবেন না, তখন স্বাভাবিকভাবেই বন্ধ হয়ে যায় ছবির কাজ!
২. পিকচার নেহি তুমহারা
১৯৯১ সালে রাজকুমার সন্তোষী একটা ছবি তৈরির কথা ভাবেন। তার নাম রাখা হয় ‘দিল হ্যায় তুমহারা’। ছবিতে সালমানের সঙ্গে কাজ করার কথা ছিল মীনাক্ষী শেষাদ্রি আর সানি দেওলের। কিন্তু ছবির কাজ শুরু করার মুখে সন্তোষী ব্যস্ত হয়ে পড়েন অন্য এক প্রোজেক্টে। সেই ছবির নাম ‘বরসাত’। ববি দেওল আর টুইঙ্কল খান্নার এই ডেবিউ ছবিতে হাত দেওয়ায় ‘দিল হ্যায় তুমহারা’ ছবিটা আর সন্তোষীর করে ওঠা হয়নি!
৩. দুর্ভাগ্যের ছবি ঘেরাও
‘দিল হ্যায় তুমহারা’র কাজ থেমে যাওয়ার পরে সালমান খান রাজকুমার সন্তোষীর আরেকটা ছবি সই করেন। সেটার নাম রাখা হয়েছিল ‘ঘেরাও’, নায়িকার চরিত্রে সই করানো হয়েছিল মণীষা কৈরালাকে। এই ছবি বাজেট-সংক্রান্ত কারণে মহরতের পরেই বন্ধ হয়ে যায়।
৪. অ্যায় মেরে মুভি
এই কথা বলেই কি ছবির কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কান্নাকাটি করেছিলেন সালমান, আরবাজ দুই ভাই? বলা মুশকিল! তবে এটুকু পাকা থবর ‘অ্যায় মেরে দোস্ত’ নামের একটি ছবিতে প্রথম বার এক সঙ্গে কাজ করার কথা ছিল তাদের। ছবির নায়িকা হিসেবে কাজ করার কথা ছিল দিব্যা ভারতী আর করিশমা কাপুরের। কিন্তু একটা গান রেকর্ড করার পর ছবির কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরে এই একই চিত্রনাট্য নিয়ে যখন কাজের প্রস্তাব ওঠে, তখনই আসে দিব্যা ভারতীর মৃত্যুর খবর! এরপর অমঙ্গলের দ্যোতক ভেবে বন্ধ করে দেওয়া হয় ছবির কাজ। যে গানটি রেকর্ড করা হয়েছিল, তা যোগ হয় সালমানের ‘মঝধার’ নামে অন্য এক ছবির সঙ্গে।
৫. বাজেট যখন বুলন্দ নয়
এ সেই সময়, যখন সোমি আলির সঙ্গে সালমানের সম্পর্ক নিয়ে ভরে উঠছে সংবাদ মাধ্যমের পাতা। সেই সময়ই তাদের দু’জনকে জুটি করে শুরু হয় ‘বুলন্দ’ ছবির কাজ। দুর্ভাগ্য, অর্ধেক শুটিং হয়ে যাওয়ার পরে ছবির কাজ বন্ধ করে দিতে হয়। কেন, তার কোনো স্পষ্ট কারণ জানা যায় না।
৬. হে রাম
ঠিক ছিল, সোহেল খান প্রথম যে ছবিটি বানাবেন, তার নাম ‘রাম’। এই ছবিতে সালমান খানের সঙ্গে অভিনয় করার কথা ছিল অনিল কাপুর আর পূজা ভাটের। শুটিং শুরু করার পরে যখন দেখা যায় বাজেট বেড়েই চলেছে, তখন বন্ধ হয়ে যায় ছবির কাজ।
৭. নিয়তির লুকোচোরি
‘চোরি মেরা নাম’। ঠিক এটাই ভাবা হয়েছিল ছবির টাইটেল হিসেবে। ছবিতে সালমানের সঙ্গে কাজ করার কথা ছিল সুনীল শেঠি, শিল্পা শেঠি আর কাজলের। কথা ছিল, অ্যাকশন স্টান্টে ভরপুর এক ক্রাইম থ্রিলার দর্শককে উপহার দেবেন নির্মাতারা। শেষ পর্যন্ত যদিও দর্শক পান সারপ্রাইজ-মানে ছবির কাজ বন্ধ হয়ে যায়!
৮. ছবি দশ বাঁও জলে
১৯৯৭ সালে ‘দশ’ নামে একটা ছবি সই করেন সালমান। সঞ্জয় দত্ত, রবিনা টন্ডন, শিল্পা শেঠি অভিনীত ছবিটার পরিচালক ছিলেন মুকুল আনন্দ। শুটিং যখন প্রায় মাঝপথে, তখনই প্রাণত্যাগ করেন পরিচালক। এই দুর্ঘটনায় মর্মাহত হয়ে বন্ধ হয়ে যায় ছবির কাজ।
৯. রাম রাম
ছবির নাম রাখা হয়েছিল ‘রাজু রাজা রাম’। ডেভিড ধাওয়ানের পরিচালনায় এই ছবিতে রাজু আর রাজার চরিত্রে অভিনয়ের কথা ছিল সালমান আর গোবিন্দার। আর রাম চরিত্রটার জন্য বাছা হয়েছিল জ্যাকি শ্রফকে। কিন্তু শুটিং শুরুর আগেই কেলেঙ্কারিতে নাম যোগ হয় প্রযোজনা সংস্থার। তারপরে আর ছবির কাজ বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া উপায় কীই বা থাকতে পারে!
১০. ছবি নিয়ে আঁখ মিচোলি
পরিচালক অনীশ বাজমির ইচ্ছে ছিল সালমান খানকে নিয়ে একটা পুরোদস্তুর কমেডি ছবি করার। ছবির নাম রাখা হয়েছিল ‘আঁখ মিচোলি’। কিন্তু এখানেও সেই এক ব্যাপার- শেষ পর্যন্ত প্রযোজক আর ছবির ব্যয়ভার টানতে পারেননি। ফলে ছবির কাজ অসম্পূর্ণই থেকে যায়।