নিউজ ডেস্ক:
বর্ষাকালে স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশের কারণেই মূলত ক্ষতিকর সব ব্যাকটেরিয়ারা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। এই সময়ে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ, কলেরা, টাইফয়েড, ডায়রিয়া, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়া, ডেঙ্গু জ্বর, শ্বাসকষ্ট এবং আরো নানা রোগের সংক্রমণ ঘটে। আসুন জেনেনি বর্ষায় এসব রোগের সংক্রমণ থেকে আপনাকে বাঁচাবে এমন কয়েকটি ভেষজ সম্পর্কে…..
তুলসী: এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইটো কেমিকেল, বায়োফ্ল্যাভোনল এবং রোজম্যারিনিক অ্যাসিডের মতো অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। যা খুবই ভালো জীবাণু প্রতিরোধী এবং শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের চিকিৎসায় বেশ কার্যকর। এটি ফুসফুসে বায়ু চলাচলের রাস্তাকেও প্রসারিত করে। সুতরাং আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে প্রতিদিন অন্তত এক থেকে দুই কাপ তুলসী পাতার রসযুক্ত চা পান করুন। এটি বাইরে থেকে আসা ঠাণ্ডা-সর্দির জীবাণুকে নিষ্ক্রিয় করার পাশাপাশি ভেতরের তাপমাত্রাও ঠিক রাখবে।
হলুদ: এর রয়েছে প্রদাহরোধী উপাদান। আর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্যও বেশ কার্যকর। খাবারের সঙ্গে বা প্রতিদিন রাতে গরম দুধের সঙ্গে মিশিয়ে পান করুন এটি।
ত্রিফলা: আমলকি, হরতকি, বহেরা এই তিনটি ভেষজের সমন্বয়ে তৈরি হয় ত্রিফলা। এতে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। বর্ষাকালে হজম ক্ষমতা কমে আসে। আর ত্রিফলা হজম শক্তির উন্নতিতে বেশ কার্যকর। এছাড়া আমলকি ভিটামিন সি-র সবচেয়ে বড় উৎস। যা ঠাণ্ডা-সর্দির তীব্রতা কমায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। বহেরা কফ তাড়াতে এবং রক্তের জমাটবদ্ধা ঠেকাতে কাজ করে। হরিতকির গুড়ার সরবত দিয়ে গড়গড়া করলে গলা পরিষ্কার থাকে। এছাড়া হরিতকি হজমেও সহায়ক।
যষ্ঠিমধু: শ্বাসযন্ত্রকে পরিষ্কার রাখতে যষ্ঠি মধু সেই প্রাচীন কাল থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ঠাণ্ডা-সর্দি, গলা ব্যাথা, স্বরভাঙ্গা এবং এ ধরনের সমস্যায় এটি সবচেয়ে কার্যকর।
রসুন: রসুনে রয়েছে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক নাশক এবং অ্যান্টি প্রোটোজোয়াল উপাদান। কফ এবং বুকের ব্লক পরিষ্কারে বেশ কার্যকর এটি। রসুনে থাকা ‘অ্যালিসিন’ ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া নাশক। আর এর কারণেই রসুনে তীব্র ও ঝাঁঝালো গন্ধ হয়। রসুনে থাকা আরেকটি উপাদান ‘অ্যাজোয়েন’ যা ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসজনিত সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। পাশাপাশি এটি ক্যান্সারের বিরুদ্ধেও একটি প্রাকৃতিক প্রতিরোধমূলক উপাদান হিসেবে কাজ করে। বিশেষ করে মলাশয়ের ক্যান্সার প্রতিরোধে বেশ কার্যকর এটি। এটি মাংসপেশির খিঁচুনি এবং ব্যাথা উপশমেও কাজ করে।
আদা: আদাতে রয়েছে গিনজারোল ও শাওগল নামের প্রদাহরোধী উপাদান। এটি গলা ব্যাথা দ্রুত সারাতে কার্যকর। এছাড়া শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের জন্য দায়ী রাইনোভাইরাস হত্যা পটু এটি।
দারুচিনি: গলা ব্যাথা, ঠান্ডা ও সর্দি সারাত সহায়ক দারুচিনি। এককাপ দারুচিনি চা গলার প্রদাহ, খুশখুশ এবং আসন্ন ঠাণ্ডা প্রতিরোধে বেশ কার্যকর।
মরিচ: টাণ্ডা এবং কফের চিকিৎসায় টনিকের সঙ্গে মরিচ যোগ করা হয়। সাইনোসাইটিস এবং নাকের ছিদ্র বন্ধ হয়ে গেলে তা সারিয়ে তুলতেও বেশ কার্যকর এটি। এছাড়াও এতে রয়েছে শ্বাসযন্ত্রে জমে থাকা কফ এবং শ্লেষ্মা পরিষ্কারেও এটি সহায়ক ভুমিকা পালন করে। এর যে প্রাকৃতিক উত্তেজক গুন তা নাক ঝাড়া এবং কফ ফেলার মধ্য দিয়ে আপনার দেহ থেকে কফ ও শ্লেষ্মা বের করে দিতেও সহায়তা করে। ফলত আপনার দেহকে সংক্রমণ বা অসুস্থতা থেকে রক্ষা করে।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস