নিউজ ডেস্ক:
নিজের বয়স ধরে রাখতে কে না চায়। কিন্তু বয়স একটি প্রাকৃতিক বিষয়, সময়ের সাথে সাথে বয়স বৃদ্ধি পাবে- এটাই স্বাভাবিক। তারপরও ত্বকের বয়স ধরে রাখার জন্য অনেকেই ব্যবহার করেন নানান ধরনের ক্রিম কিংবা লোশন। কিন্তু এতে ত্বক কিছুটা সুস্থ থাকলেও বয়স কমানো সম্ভব হয় না। শরীরের আভ্যন্তরীণ অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে সতেজ রেখে তারুণ্যকে ধরে রাখতে পারে শুধু সঠিক ও পুষ্টিকর খাবার। আসুন জেনে নেই, এমনই কিছু খাবারের তালিকা যা আপনার তারুণ্যকে ধরে রাখতে পারে।
১. পালংশাক
শাক অনেকে পছন্দ করেন না। কিন্তু যদি বয়স ধরে রাখতে চান, তবে পালংশাক খাদ্য তালিকায় রাখুন। পালংশাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং ই রয়েছ যা সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে থাকে। এটি হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখে এবং রক্তচাপ কমিয়ে দেয় এবং কলেস্টরল হ্রাস করতে সাহায্য করে। রান্না বা সালাদ যেকোনোভাবে খেতে পারেন পালংশাক।
২. গাজর
এই সবজিতে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ। যা দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে। তাছাড়া ত্বকের জন্যও গাজর অত্যন্ত উপকারী। ভিটামিন এ কোষ গঠনে সাহায্য করে তাই ত্বক সুন্দর রাখে। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার রোধেও সাহায্য করে গাজর।
৩. ডার্ক চকলেট
কোকো প্রোটিন ও ভিটামিন বি সমৃদ্ধ অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি উৎসও যা চুলের গুনগত মান ভালো করে। এছাড়া এটি শরীরের বাড়তি চর্বি পুড়িয়ে ওজন কমাতে সহায়তা করে।
৪. মিষ্টিআলু
বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদানের অন্যতম উৎস মিষ্টিআলু। তাছাড়া ডায়বেটিসের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে মিষ্টিআলু। এতে রয়েছে গ্লুটাথায়ন নামের একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা হজম শক্তি বাড়াতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে সাহায্য করে। আলঝাইমার, লিভারের সমস্যা, বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক ইত্যাদির ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে মিষ্টি আলু। এছাড়া মিষ্টি আলুতে ভিটামিন সি’র পরিমাণও প্রচুর। যা ত্বকের বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে।
৫. ব্লুবেরি
উচ্চ ভিটামিন, খনিজ পদার্থ এবং পটাসিয়াম সমৃদ্ধ ব্লুবেরি শরীরে বার্ধক্যের বিরুদ্ধে কাজ করে এবং ত্বকের ফোলা ভাব কমায়।
৬. গ্রিন টি বা সবুজ চা
তারুণ্য ধরে রাখতে অনেক জনপ্রিয় একটি পানীয় হচ্ছে সবুজ চা। সবুজ চায়ে রয়েছে একাধিক পুষ্টি উপাদান ও খনিজ পদার্থ যেমন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ভাজহীন ত্বক এবং আভ্যন্তরীণ অবস্থা ভালো রাখতে সাহায্য করে।
৭. অলিভ অয়েল
অলিভ অয়েল প্রতিদিনকার রান্নায় ব্যবহার করুন। এছাড়া এক টেবিলচামচ অলিভ অয়েল নিয়ে প্রতিদিন দুইবার করে ত্বকে ম্যাসাজ করুন। এটি ত্বকের শুষ্কতা দূর করে যেকোন দাগ দূর করতে সাহায্য করে থাকে।
৮. কাঠবাদাম
মাংস পেশী গঠন, মস্তিষ্কের গঠন এবং ত্বকের বলিরেখা দূর করতে কাঠ বাদামের জুরি নেই। তাছাড়া হাড় শক্ত করতেও কাঠবাদাম উপকারী। কাঠবাদামে কোলেস্টেরলের পরিমাণ খুবই কম থাকে যা রক্তে শর্করার পরিমাণ কমিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। কাঠবাদামে আরও আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই যা সূর্যের রশ্মি কারণে হওয়া ত্বকের ক্ষতি পুষিয়ে তুলতে সাহায্য করে। তাছাড়া স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে ভিটামিন ই।
৯. ব্রকলি
ব্রকলি বয়স বৃদ্ধির প্রক্রিয়াটিকে ধীরে করে থাকে। এতে সালফারোফেন এবং ইনডোল রয়েছে যা স্ট্রেসের সাথে লড়াই করে ক্যান্সারের কোষ ধ্বংস করে দেয়। ব্রকলিতে থাকা ভিটামিন বি মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ব্রকলিতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ফাইবার, ভিটামিন কে১ যা হাড় মজবুত করে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। সপ্তাহে তিন বা চারবার ব্রকলি খাওয়ার চেষ্টা করুন।
১০. টমেটো
টমেটো ত্বকে কোলাজেন তৈরি করে এবং ত্বকে প্রোটিনের সরবারহ বজায় রাখে। এছাড়া এতে লিকোফেইন নামক অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সূর্যের ক্ষতিকর ইউভি রশ্নি থেকে ত্বককে রক্ষা করে। প্রতিদিন এক গ্লাস টমেটোর জুস পান করতে পারেন।
১১. হলুদ
কারমামিন নামের পলিফেনল যৌগের কারণে এই মসলার রং হয় হলুদ। যা ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। তাছাড়া টিউমার হওয়ার সম্ভাবনাও কমিয়ে আনে। ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফর্নিয়া, লস অ্যাঞ্জেলেসের এক গবেষণায় জানা যায়, মস্তিষ্ক সুস্থ রেখে আলঝাইমার রোগের ঝুঁকিও কমায় হলুদ।