নিউজ ডেস্ক:
বিশ্বাস, অদৃশ্য হলেও কিন্তু শক্তিশালী এক জিনিস। সব মানুষ চায় অন্যরা তার বিশ্বাসের অমর্যাদা না করুক। কিন্তু জীবনের প্রতিটি সময় ও ক্ষেত্রে অন্যের ওপর শুধু প্রত্যাশা করে থাকলে হবে না, নিজেকেও অন্যের কাছে বিশ্বাসী হতে হবে।
অন্যের কাছে বিশ্বাসী হওয়া সাধনার ব্যাপার। জীবনের সকল ক্ষেত্রে কয়েকটি মানবিক গুণাবলীর চর্চাই পারে বিশ্বাসী মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে। আসুন জেনে নেই বিশ্বাসী হবার কিছু কাজ।
সত্য বলুন : সত্য, বরাবরই সুন্দর। তা যত নির্মম আর কঠিন হোক না কেন। তাই জীবনের প্রতিক্ষেত্রে সত্য বলার চেষ্টা করতে হবে। অন্যের কাছে বিশ্বাসী হতে হলেও সত্যকে আপন করতে হবে। মজার বিষয় হলো, আপনি মানুষ হিসেবে সকলের পছন্দের মানুষ হবেন না এটাই স্বাভাবিক। তাই কেউ আপনাকে পছন্দ না করলেও আপনি সত্যবাদী হলে, ঠিকই মানুষটার কাছে বিশ্বাসী হতে পারবেন। অন্যের পছন্দের মানুষ হওয়া আর বিশ্বাসী হওয়া কাছাকাছি বিষয় হলেও দুইটা ব্যাপার কিন্তু ভিন্ন।
কথা দিয়ে কথা রাখবেন : কাউকে কথা দিলে তা রাখুন। এই ব্যাপার আপনাকে খুব সহজে অন্যের কাছে বিশ্বাসী করে তুলবে। অনেকের ধারণা, মুখে ওয়াদা বা প্রমিজ না বললে সেই কথা না রাখলেও কিছু হয় না। এটা সম্পূর্ণ ভুল। ওয়াদা/প্রমিজ না বললেও অন্যকে বলা কথা রাখা আপনার দায়িত্ব। কোনো কারণে আগে বলা যেকোনো ধরনের কথা রাখতে না পারলে ক্ষমা চান, দরকার হলে কারণসহ বলুন। এতে সেই মানুষের কাছে আপনি বিশ্বাসী হবেন।
অন্যের ‘গোপন’ কথা গোপন রাখুন : কেউ যখন আপনাকে তার জীবন বা যেকোনো বিষয় নিয়ে কিছু বলবে তা গোপন রাখুন। অন্যের গোপনীয় বিষয় তার অনুমতি ছাড়া কখনোই কাউকে বলবেন না। এমনকি কারো ফোন নম্বর, ই-মেইল, বাসার ঠিকানা সেই ব্যক্তির অনুমতি ছাড়া দিবেন না।
না বলতে শিখুন : না বলতে পারাও একটা গুণ। সবাই না বলতে পারে না, ফলে নিজের সামর্থ্যের মধ্যে না থাকার পরও অন্যকে নানা কাজে হ্যাঁ বলে দেয়। পরিবর্তে কাজ না হলে, কথা রাখতে না পারলে অন্যের চোখে সেই মানুষটা আর যাই হোক বিশ্বাসী হতে পারে না। তাই নিজের যোগ্যতা, সামর্থ্য জেনেই তবেই অন্যকে হ্যাঁ বলুন। নয়তো না বলে দিন, সঙ্গে আপনার অপারগতা জানান সুন্দর ভাবে।
একটা বিষয় খেয়াল রাখবেন, না বলুন সুন্দর ভাবে, কঠিন হয়ে বাজে ভাবে না বলবেন না। এতে অন্যের কাছে বিশ্বাসী হবার বদলে অপছন্দের মানুষ হয়ে যাবেন।
নিজেকে মিথ্যা জাহির নয় : যে সত্য কথা বলে, এই ব্যাপারটা তাদের মাঝে থাকে না। তাও নিজের আচার-আচরণ, ব্যবহারে সর্তক থাকুন। এমন কোনো আচরণ করবেন না, যা আপনার কথা আর কাজের বিপরীত হয়। এই ব্যাপারগুলো অন্যের প্রতি আপনার ভাবমূর্তি নষ্ট করবে, অন্যের কাছে বিশ্বাসী হবার স্বপ্ন বা ইচ্ছা অপূর্ণই রয়ে যাবে। তাই, আপনি যা, যেমন চিন্তাধারা আপনার সেটাই অন্যের সামনে প্রকাশ করুন। মিথ্যা জাহির করবেন না।
কাজে সৎ থাকুন : নিজের কাজগুলো দায়িত্বের সঙ্গে পালন করুন। শুধু নিজের কাজ নয় অন্য যে কেউ কোনো দায়িত্ব দিলে তা সৎ উপায়ে সুন্দর ভাবে করার চেষ্টা করুন। এটা ভুলবেন না কেউ আপনাকে কোনো দায়িত্ব দেওয়া মানেই সে একধরনের বিশ্বাস থেকেই আপনাকে দায়িত্ব দিয়েছে। আপনার কাজের মধ্য দিয়েই তার সে বিশ্বাসকে ধরে রাখুন।
বিশ্বাসী মানুষ সমাজ, সংসার, সম্পর্ক সকল ক্ষেত্রের জন্য অমূল্য। তাই নিজে বিশ্বাসী হবার সঙ্গে সঙ্গে অন্য মানুষের বিশ্বাস ও কাজকে সম্মান জানাতে হবে। তাহলে আপনার কাজ ও আপনাকেও মানুষ বিশ্বাস করবে।