নিউজ ডেস্ক:
শিরোনাম দেখে একটু খটকা লাগতে পারে! কিন্তু সত্যিকার অর্থেই এমন অবিশ্বাস্য ঘটনাটি ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটিতে। স্বামী মারা যাওয়ার তিন বছর পর তাঁর স্ত্রী জন্ম দিল তাঁদেরই সন্তানকে। মৃত স্বামীর শুক্রানুর সাহায্যে স্ত্রী কৃত্রিমভাবে গর্ভবতী হয়ে জন্ম দিলেন এক মিষ্টি কন্যাসন্তানের।
নিউইর্য়ক সিটি পুলিসের অফিসার ওয়েনজিয়ান লিউ এবং তাঁর সহকারি রাফেল র্যামোসকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে তাঁদের পুলিশের গাড়িতে হামলা চালিয়ে খুন করা হয়। লিউয়ের স্ত্রী পেই জিয়া শেন স্বামীর শুক্রানু নিয়ে কৃত্রিমভাবে গর্ভবতী হয়ে স্বামীর মৃত্যুর প্রায় তিনবছর পর জন্ম দিল তাঁদেরই সন্তানকে। লিউয়ের পরিবার নতুন অতিথিকে পেয়ে উচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়েছেন।
স্বামীর মর্মান্তিক মৃত্যুর পর অনেকেই পেই জিয়ার কঠিন পরিস্থিতির সাক্ষী থেকেছেন। ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে লিউয়ের শেষকৃত্যের সময় তাঁর বিধবা স্ত্রী পেই জিয়া চোখে জল নিয়ে জানান, তাঁর স্বামী সবচেয়ে কাছের বন্ধু ছিলেন। পেই জিয়ার কাছে তাঁর স্বামী একজন ‘নায়ক’ যাঁর কাছে পরিবারই সবকিছু ছিল। মাত্র ৩২ বছর বয়সে লিউ পরিবারকে ছেড়ে চলে যান। পেই জিয়া বলেন, ‘আমার বিশ্বাস তিনি সব সময় আমাদের সঙ্গে আছেন। ’
লিউয়ের মৃত্যুর প্রায় তিন বছর পর মঙ্গলবার পেই জিয়া নিউইয়র্কের প্রেসবাইটেরিয়ান হাসপাতালে এক শিশুকন্যার জন্ম দেন। নবজাতিকার নাম রাখা হয়েছে অ্যাঞ্জেলিনা। নিউইয়র্ক সিটি পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, যে রাতে পেই জিয়ার স্বামীর মৃত্যু হয় সেদিনই পেই জিয়া তাঁর স্বামীর শুক্রাণু সংরক্ষণ করে রাখেন তাঁদের ভবিষ্যত সন্তানের জন্য। নিউইয়র্ক সিটি পুলিস বিভাগের পক্ষ থেকেই পেই জিয়া ও সদ্যোজাত অ্যাঞ্জেলিনার ফটো পোস্ট করা হয় সোশ্যাল নেটওয়ার্কে। নবজাতিকার মাথায় পড়ানো হয়েছে নিউইয়র্ক সিটি পুলিসের টুপি।
২০১৪ সালে লিউয়ের সঙ্গে পেই জিয়ার সদ্য বিবাহ হয়েছিল। ওই বছরের ডিসেম্বরে বন্দুকবাজ ইসমাইল ব্রিন্সলের হামলায় মারা যান লিউ এবং তাঁর সহকর্মী। এই ঘটনার পর ইসমাইল ব্রিন্সলে নিজেও আত্মঘাতী হয়। লিউয়ের শেষকৃত্যে বহু মানুষের জমায়েত হয়েছিল। এই প্রথম কোনও এশিয়ান বংশোদ্ভূত আমেরিকান পুলিশ তাঁর ডিউটি করতে গিয়ে মারা গেলেন। মঙ্গলবারই লিউয়ের পরিবার তাঁদের ছেলের স্ত্রী এবং নাতনিকে দেখতে হাসপাতালে আসেন। তাঁদের ছেলের মৃত্যুর পর ফের তাঁদের নতুন আশা দেখতে পেলেন নাতনির মধ্যে। পেই জিয়া তাঁর কৃত্রিমভাবে গর্ভবতী হওয়ার কথা গোপন করে গিয়েছিলেন লিউয়ের মা-বাবার কাছে।
লিউয়ের মা বলেন, ‘নাতনি দেখতে হয়েছে আমার বউমার মতো। কিন্তু তার চোখ আর কপাল একদম আমার ছেলের মতো। আমি আমার নাতনির মধ্যে মৃত ছেলেকে খুঁজে পেয়েছি। ’ অ্যাঞ্জেলিনার একমাস বয়স হলে তাকে তার বাবার কবরে আর্শীবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হবে। পেই জিয়া বলেন, ‘লিউকেও তো জানাতে হবে যে আমাদের একটি ফুটফুটে মেয়ে সন্তান হয়েছে। ’
সূত্র: আজকাল