নিউজ ডেস্ক:
পরিবেশ দূষণের একটা বড় কারণ প্লাস্টিক বর্জ্য। এটি সমুদ্রের জন্য বিশেষ ক্ষতিকর। এই ক্ষতি কমাতে এক ভিন্নধর্মী উদ্যোগ নিয়েছেন এক কানাডিয়ান। পানামার বোকাস দেল তোরো রাজ্যের প্রধান দ্বীপ ইসলা কোলোনে তৈরি করা হয়েছে অদ্ভুত এই প্রাসাদটি। প্রায় ৪০,০০০ পুরোনো বোতল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এটি।
প্রাসাদটির প্রবেশদ্বার ও ভেতরে নানা চিত্রকর্মে দেখানো হয়েছে- কিভাবে বিশ্বের সমুদ্রগুলো প্লাস্টিকের কারণে দূষণের শিকার হচ্ছে। গবেষণা দল ‘ফিউচার ওশান’র মতে, বছরে ৩০ কোটি টন প্লাস্টিক বর্জ্যের অল্প পরিমাণই প্রক্রিয়াজাত করে পূনর্ব্যবহারযোগ্য করা হয়। অপরিশোধিত বর্জ্যের অনেকটুকুই যায় সমুদ্রের জলে, ২০১০ সালে যার পরিমাণ ছিল ৪৮ লাখ টন থেকে ১ কোটি ২৭ লাখ টন পর্যন্ত।
৯ বছর আগে কানাডার রবার্ট বেজেয়াউ মূলত অবসরের পরিকল্পনা নিয়েই বোকাস দেল তোরোতে এসেছিলেন। কিন্তু সেখানে কতটা বর্জ্য উৎপাদিত হয় তা নিয়ে দ্বীপ কর্তৃপক্ষের এক গবেষণায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে অংশ নিয়ে বনে যান প্লাস্টিক দূষণবিরোধী প্রচারক।
তিনি বলেন, ‘যদি পৃথিবীর ৭৩০ কোটি মানুষ প্রতিদিন এক বোতল করে পানীয় পান করেন, তাহলে বছরে ২৬ হাজার ৬০০ কোটি বোতল বর্জ্য তৈরি হয়। ‘
বছরে মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা থেকে হাজারো পর্যটক ছুটি কাটাতে আসেন এই দ্বীপপুঞ্জে। চমৎকার সব বার ও রেস্টুরেন্টের পাশাপাশি এসব দ্বীপে আছে ম্যানগ্রোভ বন, টলটলে সমুদ্র ও মনোরম সৈকতের মতো প্রকৃতির সমারোহ। কিন্তু পর্যটকের স্রোতের কারণে তৈরি হয় প্রচুর বর্জ্য, যার শেষ ঠিকানা হয় সমুদ্র, কারণ, এদের পর্যাপ্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সক্ষমতা নেই।
৬২ বর্গ কিলোমিটারের ছোট্ট এই দ্বীপেই বছরে জমা হয় প্রায় পনের লাখ খালি বোতল। রবার্ট এগুলো সংগ্রহ করেন তার নির্মাণ প্রকল্পের জন্য। শুধু সাধারণ পানীয়ের বোতলই তিনি ব্যবহার করতে পারেন, কারণ অন্য বোতলগুলোতে দাহ্য উপাদান থাকে।
প্রথমে লোহার খাঁচায় প্লাস্টিকের বোতলগুলো একটার ওপর আরেকটা রাখা হয়। এরপর এগুলোর ওপর সিমেন্টের প্রলেপ দিয়ে দেয়াল বানানো হয়। প্রতিটি দেয়ালে ৩০০টি অর্ধলিটার বা ১২০টি দেড় লিটারের বোতল আঁটে। শুধু মধ্যযুগীয় শৈলীতে বানানো ত্রিকোণ জানালাগুলো এইভাবে তৈরি সম্ভব হয় না।
সূত্র : ডয়েচ ভেলে