তবে দীর্ঘদিন পরে চলতি বছর এ এলাকার এই জনদুর্ভোগ দূর করার উদ্যােগ নিয়েছে যশোর পৌরসভা। বিটুবিনের পরিবর্তে পলিথিন রিফাইন করে তৈরি করা হবে সড়কটি। যেটি হবে বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম মডেল রাস্তা।
জানা গেছে, মাওলানা শাহ্ আব্দুল করিম সড়কটি যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম কলেজ) কলেজের সামনে থেকে বামনপাড়া দিয়ে যশোর সিটি বাইপাসে শেষ হয়েছে। এই সড়কটি দিয়ে চলাচলে স্থানীয়দের পাশাপাশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় এমএম কলেজ ও স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীদেরও। বর্ষা মৌসুমে এ সড়কটিতে জলাবদ্ধতা হলে এ এলাকার ছাত্রাবাস ও বাসাবাড়ি থেকে বের হতে পারে না শিক্ষার্থীরা। শুধু তাই নয় এলাকার বাসিন্দাদের ঘরবাড়ির নিচতলা পানিতে তলিয়ে যায়। বিশেষ করে খড়কি এলাকার বটতলা থেকে জেবিন মোড় হয়ে কবরস্থান এলাকা পর্যন্ত বর্ষা মৌসুমে হাটু পানি থেকে- কোমর পানি পর্যন্ত জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
সরজমিনে এ সড়কটি ঘুরে দেখা যায়, সড়কের বিভিন্নস্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের দুপাশে ড্রেনে ঢাকনার ব্যবস্থা নেই। গোটা সড়কটিতে বিটুমিন উঠে গিয়ে বালু আর মাটি বের হয়ে আছে। ফলে ছোটখাটো যানবাহন রিকশা, মোটরসাইকেল ইত্যাদি চলাচলে ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটছে।
যশোর এমএম কলেজের শিক্ষার্থী তাসলিমা আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আগে এমএম কলেজ গেটের সামনে সড়কে একটি ছাত্রাবাসে থাকতাম। যখন জলাবদ্ধতা আর রাস্তায় এই দশা দেখলাম তখন খড়কির দিকে একটি ছাত্রাবাসে থাকা শুরু করি।
তিনি বলেন, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে খড়কি থেকে এমএম কলেজ জেবিন মোড় পর্যন্ত সড়কটি পানিতে তলিয়ে থাকে। কলেজে আসতে আমাদের মতো শিক্ষার্থীদের বিপাকে পড়তে হয়। কাপড়চোপড় ভিজে যায়, অনেক সময় রিকশায় থাকলে পাশ থেকে যাওয়া গাড়ির পানি ছিটে গায়ে লাগে।
এমএম কলেজের আরেক শিক্ষার্থী রবিন শেখ বলেন, আমি কলেজে পড়ার শুরু থেকে দেখছি এই সড়কটির বেহাল দশা। সংস্কারে কতৃপক্ষের উদ্যােগ চোখে পড়েনি। বর্ষাকাল আসলেই বুকের মধ্যে ধুপ ধুপ করে এই বুঝি জলাবদ্ধতা শুরু হবে, আর ঘর থেকে বের হতে পারবো না।
জেবিন মোড় এলাকার বাসিন্দা রিজাউল করিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রতি বছর এই সড়কে জলাবদ্ধতা হলে আমাদের ঘরে পানি উঠে যায়। নোংরা পরিবেশ সৃষ্টি হয়। নিচতলার রান্না-খাওয়াও বন্ধ হয়ে যায়। আমরা এ থেকে মুক্তি চাই।
স্থানীয় বাসিন্দা ও লন্ড্রি ব্যবসায়ী তাইজেল হোসেন বলেন, শুনলাম এ রাস্তাটি সংস্কার করা হবে। তবে এর আগেও এমন কথা শুনেছি, বাস্তবে কোনো পদক্ষেপই দেখতে পাইনি। তবে আমাদের দাবি দ্রুত এই সড়কটি সংস্কার করে এই এলাকার বাসিন্দাদের এই চরম দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দেওয়া হোক।
যশোর পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) শিকদার মোকলেচুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের জিলা স্কুলের পাশ থেকে বামনপাড়া হয়ে সিটি বাইপাস পর্যন্ত মাওলানা শাহ আব্দুল করিম সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বর্তমান সময়ের সর্বোচ্চ আধুনিক প্রযুক্তি বিটুমিনের পরিবর্তে পলিথিন রিফাইন করে রাস্তাটি তৈরি করা হবে। যেটি বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম মডেল রাস্তা হবে। সড়কটি বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে তৈরি করা হবে।
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি আমাদের জানিয়েছে, লোকাল গভারমেন্ট কোভিড-১৯ রেসপন্স অ্যান্ড রিকোভারি প্রজেক্ট (এলজিসিআরআরপি)। প্রাথমিকভাবে আমরা এতটুকু জানতে পেরেছি, বিস্তারিত পরে জানাতে পারব।