মাসুদ রানা, মেহেরপুর: মেহেরপুর হোটেল বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহিদ ইকবাল শিমনকে লাঞ্চিত করার প্রতিবাদে দোকানপাট বন্ধ করে দিয়ে সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছে ব্যবসায়ীরা।
সোমবার দুপুর ১টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত শহরের হোটেল বাজার ব্যবসায়ী সমিতির অন্তর্গত ব্যবসায়ীরা এ কর্মসূচী পালন করছেন। এসময় শহরের হোটেল বাজারের বিএম স্কুলের সামনে, হোটেল বাজার মোড়, নতুন বাজার মোড়, কোর্ট মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।
এসময় প্রায় আড়াই ঘন্টা সড়কে সকল ধরণের যানবাহন বন্ধ থাকে। পরে বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম রসুল, পৌর মেয়র মাহাফুজুর রহমান রিটন ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলাকারীকে গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে ব্যবসায়ী নেতারা কর্মসূচী প্রত্যাহার করে নেন।
ব্যবসায়ীরা জানান, সোমবার সকালে হোটেল বাজার মোড়ের রাজু ফল ভান্ডার নামের একটি দোকানে ফ্লেক্সি লোড করতে যায় মেহেরপুর সদর থানার ওসি রবিউল ইসলামের ছেলে রোজান। সেখানে ফ্লেক্সি লোড দিতে দেরি হওয়ায় রোজানের সাথে ব্যবসায়ী রাজুর বাকবিতন্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে রোজানের পক্ষ নিয়ে ব্যবসায়ী রাজুকে লাঞ্চিত করেন পুলিশের এক কনষ্টেবল (নাম জানা যায়নি)। পরে বিষয়টি হোটেল বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহিদ ইকবাল সিমন ঘটনা স্থলে গিয়ে বিষয়টি মিমাংসার জন্য তাদের কার্যলয়ে মিলিত হয়। এক পর্যায়ে জেলা প্রশাসনের কর্মচারী (গাংনী উপজেলা তেঁতুলবাড়ি ভুমি অফিসের পিয়ন) লিটন শেখ রোজানের পক্ষ নিয়ে জাহিদ ইকবাল সিমনের উপর চড়াও হয় এবং তাকে লাঞ্চিত করে। এসময় ব্যবাসয়ীরাও লিটনকে পাল্টা লাঞ্চিত করে। পরে খবর পেয়ে লিটনের ভাই টিটন শেখ ঘটনাস্থলে গিয়ে জাহিদ ইকবাল সিমনের উপর হামলা চালায়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা তাৎক্ষণিকভাবে শহরের সকল দোকানপাট বন্ধ করে দিয়ে রাস্তায় নেমে আসে এবং টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে। এসময় মেহেরপুর শহরের প্রধান সড়কের প্রধান সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। সাধারণ মানুষের চলাচলে দুদর্শা নেমে আসে।
পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ ফরিদ আহমেদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম রসুল, পৌর মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন, সদর থানার ওসি রবিউল ইসলাম, হোটেল বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল হান্নান, সাধারণ সম্পাদক জাহিদ ইকবাল সিমনসহ ব্যবসায়ী নেতারা বৈঠকে বসেন। পরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লিটনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া ও টিটনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে ব্যবসায়ীরা কর্মসূচী প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন।
হোটের বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি শেখ মোমিন বলেন, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে কর্মসূচী প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
মেহেরপুর সদর থানার ওসি রবিউল ইসলাম জানান, তাঁর ছেলেকে নিয়ে ছোট ভুলবোঝাবুঝি হয়েছিল। সেটা সকলে মিলে সমাধান করা হয়েছে। তবে উচ্ছু্খৃল ভাবে লিটন ও টিটন ব্যবসায়ী নেতার উপর হামলা চালিয়ে ভুল করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।