মাসুদ রানা,মেহেরপুর ॥ মেহেরপুরে ১১০ টি প্রাথমিক ও ৩৫ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের টিউবয়েলে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এর মধ্যে মাত্র ৫৩ টি বিদ্যালয়ে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থ্য করা গেলেও বাকি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে পান করছে আর্সেনিকযুক্ত পানি। শিক্ষকদের দাবি বারবার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলকে অবহিত করেও কোন প্রতিকার মিলছে না। শিশু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুরা দীর্ঘদিন ধরে এ পানি পান করলে চামড়া, কিডনি, লিভারসহ মস্তিস্কের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
মেহেরপুরের বিভিন্ন গ্রামের পর এবার বিদ্যালয়গুলোতে মিলেছে আর্সেনিকের আধিক্য। লাল চিহ্নিত টিউবয়েলে পানি পান করা নিষেধ থাকলেও বাধ্য হয়েই শিশুদের পান করতে হচ্ছে আর্সেনিকযুক্ত পানি। কারণ জেলার ১২০ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৫ টি ও ৩০৮ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১১০ টিতে মিলেছে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক। কোন কোন বিদ্যালয়ে বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে আর্সেনিকযুক্ত পানির ব্যবস্থা করলেও সে টিউবয়েলগুলো এখন বিকল হয়ে পড়ে আছে। ফলে জেনেশুনেও তাদের বিষ পান করতে হচ্ছে। কারণ আপপাশের বাড়ির টিউবয়েলেও রয়েছে আর্সেনিকের অস্তিত্ব। অনেকেই বাড়িতে বিশুদ্ধ পানি পান করলেও বিদ্যালয়ে এসে আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করতে হচ্ছে। ফলে আর্সেনিক থেকে রেহাই পাচ্ছেনা তারা।
বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা বলছে আমরা বাড়ি থেকে সকালে স্কুলে আসি। সারা দিনে অনেক পানি পিপাসা লাগে। আমাদের বাধ্য হয়ে এই আর্সেনিক যুক্ত পানি পান করতে হচ্ছে কারন আমাদের বিদ্যালয়ে কোন নিরাপদ পানি নাই । তাই আমাদের কিছু কারার নেই।
শিক্ষকরা বলছেন, বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা ইচ্ছা না থাকলেও তারা এই আর্সেনিক যুক্ত পানি পান করছে। অনেক চেষ্টা করেও তারা নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করতে পারছেন না। স্থানীয় ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে বিষয়টি জানিয়েও কোন সমাধান পাচ্ছিনা । কতৃপক্ষকে বারবার জানিয়ে কোন কাজ হচ্ছেনা।
বড়দের থেকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় শিশুদের জন্য নিরাপদ পানি অত্যান্ত প্রয়োজন। দীর্ঘদিন ধরে আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করলে ধারাবাহিকভাবে চামড়া, কিডনি, লিভারের ক্ষতি হতে পারে। এমনকি আঘাত হানতে পারে মস্তিস্কে।