শেষ ওভারে ছয় বলে ৯ রান দরকার ছিল ঢাকার। ওভারের প্রথম তিন বলই ডট দেন মেহেদী। চতুর্থ বলে বাউন্ডারি হাঁকান মুক্তার। পরের বল ছিল নো। শেষ দুই বলে লাগত চার রান। কিন্তু পঞ্চম বলটি ডট দিয়ে রাজশাহীকে জয় উপহার দেন মেহেদী। দুই রানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় ঢাকাকে।
১৭০ রানের জবাবে বেক্সিমকো ঢাকার শুরুটা হয় নড়বড়ে। ঢাকাকে ভালো শুরু এনে দিতে পারেননি দুই ওপেনার ইয়াসির আলী ও তানজিদ হাসান তামিম। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারায় ঢাকা। ১৮ রানে রান আউটে কাটা পড়েন তানজিদ, ১৯ রানে ভাঙে ঢাকার ওপেনিং জুটি। টিকতে পারেননি ইয়াসিরও। পঞ্চম ওভারে তাঁকে এলবির ফাঁদে ফেলেন মেহেদী হাসান, ৩৮ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় ঢাকা।
ঝড়ো শুরুতে ঢাকার হাল ধরতে চেয়েছেন তরুণ ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ নাঈম। সপ্তম ওভারে নাঈমের প্রতিরোধ ভাঙেন আরাফাত সানি। ১৭ বলে ২৬ রানে সাজঘরে ফেরেন নাঈম।
দ্রুত উইকেট হারানোর পর ঢাকার হাল ধরেন অধিনায়ক মুশফিক ও আকবর আলী। দেখে শুনে তরুণ ব্যাটসম্যানকে নিয়ে ছুটেন অধিনায়ক। ১৬তম ওভারে এই জুটিকে থামান ফরহাদ রেজা। ২৯ বলে ৩৪ রান করে ফিরেন আকবর।
আকবর ফেরার পর বেশিদূর দলকে টানতে পারেননি মুশফিক। ৪১ রানে তাঁকে ফেরান এবাদত হোসেন। ২৯ বলে তাঁর ইনিংসে ছিল তিন বাউন্ডারি ও এক ছক্কা। এরপর খেলা জমিয়ে তোলেন মুক্তার। অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ে ঢাকাকে জয়ের কাছে নিয়ে যান তিনি। কিন্তু শেষ করতে পারলেন না। দুই রানে হেরে যায় ঢাকা। ১৬ বলে ২৭ রানে অপরাজিত থাকেন মুক্তার।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে নয় উইকেটে ১৬৯ রান করে রাজশাহী। ব্যাটিংয়ে নেমে আনিসুল ইসলাম ইমনকে নিয়ে দারুণ শুরু করেন অধিনায়ক শান্ত। তবে শুরুর ছন্দ ধরে রাখতে পারেননি তরুণ এই ওপেনার। চতুর্থ ওভারের শেষ বলে নাসুম আহমেদের বলে লংঅনে তানজিদ হাসানের হাতে ক্যাচ তুলে দেন শান্ত। ফেরার আগে ১৬ বলে ১৭ রান করেন তিনি, ৩১ রানে প্রথম উইকেট হারায় রাজশাহী।
তিনে নেমে রনি তালুকদার খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। তাঁকে সাজঘরে পাঠান মুক্তার আলী। চারে ব্যাট করতে নামেন আশরাফুল। ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম বলে ডট দেন। দ্বিতীয় বলে সিঙ্গেল রান দিয়ে খাতা খোলেন। কিন্তু ইনিংসটা বড় করতে পারেননি। মুক্তার আলীর করা নবম ওভারের শেষ বলে অবিশ্বাস্য ক্যাচ দিয়ে সাবেক অধিনায়ককে (৫) সাজঘরে পাঠান নাঈম। এরপর শূন্য রানে বিদায় নেন ফজলে মাহমুদ। ৩৫ রানে বিদায় নেন আনিসুল।
একে একে উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় রাজশাহী। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন মেহেদী হাসান ও নুরুল হাসান সোহান। ১৮ তম ওভারে ভাঙে এই জুটি। মুক্তার আলীর বল সোহানের ব্যাটের কানায় লেগে উপরে উঠে যায়। উইকেটের পেছনে থেকে ক্যাচ লুফে নেন মুশফিক। ২০ বলে ৩৯ রানে ফেরেন সোহান। পরের ওভারে মেহেদীকে ফেরান রানা। হাফসেঞ্চুরি করে ফেরেন তরুণ এই ব্যাটসম্যান। দুই ব্যাটসম্যান ফেরার পর শেষ পর্যন্ত বেক্সিমকো ঢাকাকে ১৭০ রানের লক্ষ্য দেয় রাজশাহী।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী : ২০ ওভারে ১৬৯/৯ (নাজমুল ১৭, আনিসুল ৩৫, রনি তালুকদার ৬, আশরাফুল ৫, ফজলে মাহমুদ ০, মেহেদী ৫০, নুরুল ৩৯, ফরহাদ ১১, আরাফাত সানি ০, মুকিদুল ০ ও এবাদত ২; নাসুম আহমেদ ৪-০-৪১-১, রুবেল হোসেন ৪-০-২৯-০, মুক্তার আলী ৪-০-২২-৩, নাইম হাসান ৩-০-৩২-১, মেহেদী হাসান রানা ৪-০-৩১-১)।
বেক্সিমকো ঢাকা : ২০ ওভাড়ে ১৬৭/৫ (তানজিদ ১৮, ইয়াসির ৯, নাইম ২৬, মুশফিকুর রহিম ৪১, আকবর আলী ৩৪ , সাব্বির রহমান ৫, মুক্তার ২৭ ; মেহেদী ৪-০-২২-১, এবাদত ৪-০-৩৬-১, মুকিদুল ৪-০-৩৫-০, আরাফাত ৪-০-৩৮-১, ফরহাদ রেজা ৪-০-৩৩-১)।
ফল : দুই রানে জয়ী মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী।