নিউজ ডেস্ক:
এএ বইয়ের সবচেয়ে বড় গুণ ফ্ল্যাশব্যাক ও ফ্ল্যাশ ফরওয়ার্ডের আশ্রয়ে লেখক হায়দার আলী খান তাঁর বক্তব্য-সম্পৃক্ত ঘটনাবলিকে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে গেছেন। বলেছেনও তিনি তাঁর সে কথা বইয়ের ভূমিকায়, ‘আমার এ ক্ষুদ্র আখ্যান কোথাও সরলরৈখিকভাবে ইতিহাস-অনুসারী, আবার কোথাওবা বক্র। এই বক্রতায় ফ্ল্যাশব্যাক, ফ্ল্যাশ ফরওয়ার্ডসহ সময়ের বহুস্তরবিশিষ্টতাও রয়েছে। বহুস্তরবিশিষ্ট সময় নিয়ে এখন ঐতিহাসিকদের সর্বোচ্চ স্তরে বিশেষ বিতর্ক ও আলোচনা চলছে। তার কিছুটা আভাসও পাঠকদের দেওয়ার চেষ্টা করেছি পাণ্ডিত্যের মরুভূমির বালির কচকচানি যতটা সম্ভব বাদ দিয়ে।’
এর পরপরই অত্যন্ত বিনীতভাবে, আনুষ্ঠানিকভাবে সে কথা স্বীকার করে, আমাদের, পাঠকদের লেখক নিয়ে যাচ্ছেন এ বইয়ের ঘটনার পর্ব থেকে পর্বান্তরে।
আমরা বইয়ের শুরুতেই জানছি লেখক অত্যন্ত মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। ১৯৭১ সালে তিনি ছিলেন ঢাকা কলেজের উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির ছাত্র। ওই বছরেরই জানুয়ারি মাসে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান তরুণদের এক সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য। তিন মাস মেয়াদি এই সফরের সময়ই শুরু হয়ে যায় বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ। তাঁর আর দেশে ফেরা হয় না। এই অবস্থায় তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন, সেই বাড়ির টেলিফোন মারফত খবর পাচ্ছেন ১৯৭১-এর ২৫ মার্চে ঢাকাসহ সারা দেশে পাকিস্তানি বাহিনীর নির্বিচারে বাঙালি হত্যাযজ্ঞের সংবাদ। লেখক তাঁর প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলছেন, ‘মি. হাফম্যান…তো টেলিফোনে আমাকে জানিয়ে তাঁর কর্তব্য শেষ করলেন। কিন্তু তারপর আমার অবস্থাটা যা দাঁড়াল, তা এককথায় অবর্ণনীয়।’ এই প্রতিক্রিয়াই এ বই রচনার আদি ও অকৃত্রিম উৎস। এরপর খবর পাচ্ছেন, বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ার একেবারে শুরুর দিনই নিউইয়র্কের পাকিস্তানি কনস্যুলেটের কয়েকজন বাঙালি কূটনীতিকের বাংলাদেশের পক্ষে তাঁদের সমর্থন ঘোষণা করার কথা।