নিউজ ডেস্ক:
মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত অবৈধ বাংলাদেশিরা আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় পেলেন। এই সময়ের মধ্যে তাদেরকে গ্রেফতার বা হয়রানি করা হবে না। গত ৩০ জুন থেকে এ পর্যন্ত ব্যাপক পুলিশের সাড়াশি অভিযানে প্রায় দেড় হাজারেরও অধিক বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করা হয়। এই পটভূমিতে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে একাধিক বৈঠক হয়। এসব বৈঠকে অবৈধ বাংলাদেশিদের গ্রেফতার না করার সিদ্ধান্ত হয়। এ বিষয়ে মঙ্গলবার বিকেলে দূতাবাসের হলরোমে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহা. শহীদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, মালয়েশীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অবৈধ বাংলাদেশিদের ভাগ্য নিয়ে সমঝোতার চেষ্টা চলছে। আপাতত ৫ মাস সময় পাওয়া গেছে। এই সময়ের মধ্যে তাদের সঙ্গে আরও বৈঠক হবে। হাইকমিশনার বলেন, সোমবার কুয়ালালামপুরে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এক বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশ দূতাবাসের ডেপুটি হাইকমিশনার ওয়াহিদা আহমেদ ও শ্রম শাখার প্রথম সচিব মো. হেদায়েতুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। ওই সভায় অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক মোস্তাফার আলী বলেছেন, চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় বসবাসরত সকল অবৈধ বাংলাদেশি রি-হিয়ারিং এর প্রক্রিয়ার আওতায় বৈধ হবার সুযোগ পাবেন। ইমিগ্রেশন মহাপরিচালক এই সুযোগ গ্রহণের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
মুহা. শহীদুল ইসলাম বলেন, অবৈধ ব্যক্তিদের ধরপাকড় যেকোন দেশের অভ্যন্তরীণ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষার একটি স্বাভাবিক ও চলমান প্রক্রিয়া। তবে এখন ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ মালিকপক্ষের চিঠির ভিত্তিতে বাংলাদেশিরা যাতে নিরাপদে ইমিগ্রেশন অফিসে যাতায়াত করতে পারে তার সুযোগ করে দিবে। এছাড়াও তারা অন্যান্য আরও কার্যকর পন্থা নির্ধারণের প্রচেষ্টা করছে। এটি বাংলাদেশের পক্ষে একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত।
হাইকমিশনার বলেন, গত ৩০ জুন শেষ হওয়া ই-কাড প্রক্রিয়ায় এক লাখ অবৈধ বাংলাদেশি নিবন্ধিত হয়েছেন এবং ২ লাখ ৯৩ হাজার অবৈধ বাংলাদেশি মাই-ইজির মাধ্যমে নিবন্ধিত হয়েছে, যা সর্বমোট আবেদনের যথাক্রমে ৫৭ শতাংশ এবং ৮৯ শতাংশ। তিনি বাংলাদেশিদের এই অভূতপূর্ব সুযোগের উচ্ছ্বাসিত প্রশংসা এবং উভয় দেশের মধ্যে সহযোগিতার এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে বলেও জানান।
এদিকে বাংলাদেশ হতে ট্যুরিস্ট, প্রফেশনাল বা ব্যবসায়িক ভিসা নিয়ে মালয়েশিয়ায় কাজ করার কোন সুযোগ নেই উল্লেখ করে দেশটির অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক অনুরোধ করেন যাতে সঠিক শ্রেণীর ভিসা নিয়ে বাংলাদেশিরা মালয়েশিয়ায় আসেন, যা এয়ারপোর্টে হয়রানির সম্ভাবনাকে হ্রাস করবে।
সাম্প্রতিককালের হিসাব অনুযায়ী মালয়েশিয়ার বিভিন্ন ডিটেনশন ক্যাম্পে ৩-৬ মাস মেয়াদে ১৫ জন, ৬-১২ মাস মেয়াদে ৪ জন এবং ১ বছর মেয়াদে ৭ জন সম্ভব্য বাংলাদেশি আটক রয়েছে।
এদিকে বিপুল সংখ্যাক প্রবাসীদের সেবা প্রদানের গত এক সপ্তাহে ৩১ হাজার ৯৮৪ জনকে কন্স্যুলার সেবা প্রদান করেছে। এ ছাড়াও প্রতি সপ্তাহান্তে নিয়মিতভাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কন্স্যুলার ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় দূতাবাসে আগত সেবা গ্রহণকারিরা যাতে ওয়ান স্টপ সার্ভিসের আওতায় ব্যাংকিং সার্ভিসসহ অন্যান্য সেবা গ্রহণ করতে পারেন তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া প্রতারণার হাত থেকে রক্ষায় ন্যূনতম মূল্যে দূতাবাসের সকল সুবিধা গ্রহণের সুযোগ নেয়ার জন্য দূতাবাস থেকে প্রবাসীদের আহ্বান জানানো হয়েছে।