রবিবার, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫
রবিবার, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫

মালয়েশিয়ায় ছুরিকাঘাতে বাংলাদেশি নিহত, ১৪ দিন পর এলো লাশ

ছুরিকাঘাতে নিহত হওয়ার ১৪ দিন পর ওয়াজ উদ্দিন (৩৯) নামে এক মালয়েশিয়া প্রবাসীর কফিনবন্দী লাশ বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) ভোরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছে। সকাল সাড়ে ১০টায় তার লাশ গ্রামে বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মির্জানগরে আনা হলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার স্বজনরা। নিহত ওয়াজ উদ্দিন ওই এলাকার মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে।

গত ১ আগস্ট মালয়েশিয়ার জোহরবারো এলাকায় পাঁচ বাংলাদেশি মিলে ছুরিকাঘাতে ওয়াজ উদ্দিনকে হত্যা করে বলে দাবি করেন স্বজনরা।

ওই ঘটনায় মালয়েশিয়ার পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করে এবং জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করে।

নিহত প্রবাসীর ভাই মো. আজগর জানান, ১০ মাস আগে মালয়েশিয়া পাড়ি জমান ওয়াজ উদ্দিন। সেখানে জোহরবারো এলাকার একটি রুমে তার সাথে আরো পাঁচ বাংলাদেশি থাকতেন। এর মধ্যে তিনজন ছিলেন তার গ্রামের বাড়ি মির্জানগরের আরিফ, রায়হান ও রাসেল।

ওই পাঁচজন প্রবাসী রুমে নারী এনে অবৈধ মেলামেশা ও মদ পান করতেন। ওয়াজ উদ্দিনের বাধা সত্ত্বে থামেনি তারা। তাদের অপকর্মের একটি ভিডিও দেশে তার স্ত্রীর কাছে পাঠায়। পরে ওয়াজ উদ্দিনের স্ত্রী সেই ভিডিও আরিফ, রায়হান ও রাসেলের পরিবারের সদস্যদের দেখান। এনিয়ে ওই তিন জনের সঙ্গে ওয়াজ উদ্দিনের বিরোধ চলে আসছিল। এরই জেরে গত ১ আগস্ট ওই পাঁচ বাংলাদেশি মিলে ওয়াজ উদ্দিনকে ছুরিকাঘাতে রক্তাক্ত জখম করে। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তার মৃত্যু হয়।

ছুরিকাঘাতের পর ১০ ও ২৫ সেকেন্ডের দুটি ভিডিও মোবাইলে ধারণ করেন ঘটনায় জড়িত এক ব্যক্তি। ভিডিওতে দেখা যায় রক্তাক্ত অবস্থায় রুমের বেলকুনিতে পড়ে চিৎকার করছিলেন ওয়াজ উদ্দিন। সেখানে চারজন ব্যক্তি ছিলেন। ভিডিওতে তাদের কোমর পর্যন্ত দেখা যাচ্ছিল। সবার পরনে ছিল লুঙ্গি ও পায়ে সেন্ডেল। এর মধ্যে একজনের এক হাতে কাটার আঘাত ও লাঠি ছিল।

মো. আজগরের দাবি দুটি ভিডিও ও তাদের কথা শুনে হত্যায় জড়িতদের শনাক্ত করেছেন তিনি। বাড়িতে আনার পর ফ্রিজার অ্যাম্বুলেন্সে লাশ রাখা আছে। শুক্রবার (১৬ আগস্ট) পরিবারের সবার সঙ্গে আলোচনা শেষে লাশ দাফনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

হত্যার ঘটনায় মালয়েশিয়ার পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। পরে পুলিশ আরিফকে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানান তিনি।

নিহত ওয়াজ উদ্দিনের স্ত্রী শিউলি বেগম বলেন, ‘প্রবাসে আমার স্বামীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। দুই মেয়ে ও দুই ছেলে নিয়ে এখন কিভাবে বাঁচব?’ স্বামী হত্যার বিচারসহ সরকারের কাছে সহযোগিতা চান তিনি।

Similar Articles

Advertismentspot_img

Most Popular