নিউজ ডেস্ক:
মানুষ আল্লাহর ইবাদতের জন্য ওয়াদাবদ্ধ। ইবাদতের জন্য আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি করেছেন। মানুষ নামাজ, রোজা, হজ ইত্যাদি ইবাদতে মাধ্যমে আল্লাহকে দেওয়া তার ওয়াদা পূরণ করতে পারে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ঘোষণা করেন— ‘ওয়াদা পূরণ কর, নিশ্চয় ওয়াদার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’— সুরা বনী ইসরাঈল-৩৪
বস্তুত, অন্য মানুষকে দেওয়া ওয়াদা ভঙ্গ করা যেমন অপরাধ তেমনি আল্লাহর হক আদায় না করাও ওয়াদা ভঙ্গের নামান্তর।
হাক্কানি আলেমদের মতে, সর্বশক্তিমান আল্লাহ যেসব কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন এবং যেসব কাজ করতে বারণ করেছেন, তার সবই ওয়াদার পর্যায়ভুক্ত। তা পালনে মুমিনরা ওয়াদাবদ্ধ। আল্লাহপাক আরও ঘোষণা করেন, ‘হে বিশ্বাসীগণ তোমরা চুক্তি রক্ষা কর।’ ইমাম ওয়াহেদী বলেন— হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, পবিত্র কোরআনে যেসব বিষয় হালাল-হারাম সাব্যস্ত করা হয়েছে এবং যেসব বিষয় পরিমিত, গণ্ডিবদ্ধ ও নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে, অর্থাৎ যেসব ব্যাপারে শাস্তির বিধান দেওয়া হয়েছে, চুক্তির অর্থ তাই। যাহ্হাক (রা.) বলেন, আল্লাহ এ উম্মতের জন্য হালাল-হারাম, ফরজ নামাজসমূহ এবং অন্যান্য ফরজসমূহ পুরোপুরি মেনে চলার যে বিধান দিয়েছেন তাই উহুদ বা প্রতিশ্রুতি। আর এর চুক্তি হচ্ছে, আল্লাহ আমাদের ওপর যেসব বিষয় ফরজ বা সুনির্ধারণ করে দিয়েছেন তা যথাযথভাবে পালন করা। অবশ্যই তা পুরোপুরি মেনে চলতে হবে, কোনো অবস্থাতেই তার বরখেলাপ করা চলবে না। হজরত মোকাতেল ইবনে হাইয়ান (রা.) বলেন, চুক্তি বলতে বুঝায় পবিত্র কোরআনের মাধ্যমে বান্দার প্রতি অর্পিত হালাল-হারাম ও জায়েজ-সম্পর্কিত আল্লাহতায়ালার বিধিবিধানসমূহ। আর উহুদ হচ্ছে— মুসলমান-অমুসলমানের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি, জনসাধারণের পরস্পরের মধ্যে সম্পন্ন সব প্রকার চুক্তিনামা, ওয়াদা ও প্রতিশ্রুতি।
দুনিয়ার জীবনে রাষ্ট্রের আইনকানুন না মানলে তা যেমন অপরাধ হিসেবে বিবেচিত তেমনি আল্লাহর বিধান অর্থাৎ তার ইবাদত, হালাল-হারাম এবং অন্যান্য বিষয়াদি মেনে না চললে রোজ কেয়ামতে আল্লাহর দরবারে অপরাধী হিসেবে হাজির হতে হবে। এ দুর্ভাগ্য এড়াতে হলে পবিত্র কোরআন এবং রসুল (সা.) নির্দেশিত পথ আঁকড়ে ধরা ছাড়া কোনো গত্যন্তর নেই। আল্লাহ আমাদের সে তওফিক দান করুন। আমিন।
লেখক : ইসলামী গবেষক।