নিউজ ডেস্ক:
গরমের ছোয়ায় এপ্রিল হয়ে উঠুক সচেতনতার মাস। আরামদায়ক শীতকালীন রুটিনটা ফেলে দিয়ে ফিটনেস এবং স্বাস্থ্যকে পুনরায় চাঙা করে নেবার সময়ও এখন। কে বলেছে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা একসঙ্গে সম্ভব নয়?
মানসিক চাপ কমাবার জন্য শারীরিক ব্যায়াম অন্যতম কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। উদাহরণস্বরুপ সাধারণ মানুষ অপেক্ষা শ্রমিকেরা টুকটাক চিন্তা ও উদ্বেগে কম ভোগেন।
এখানে পাঁচটি ব্যায়ামের উল্লেখ করা হলো যেগুলো আপনাকে সত্যিই শারীরিক সুস্থতার সঙ্গে মানসিক চাপ ও উদ্বেগ থেকে দূরে রাখবে।
মানসিক চাপ কমানোর অন্যতম সেরা উপায় দৌড়ানো
সাধারণভাবে পেশিসমূহের সঠিক সঞ্চালনের জন্য নিয়মিত দৌড়ানোর বিকল্প নেই। কিন্তু জানা গেছে, দৌড় হলো মানসিক চাপ কমাবার অন্যতম মহৌষধ। এমনকি ভালো ফলাফল না পেলেও নিয়মিত দৌড়ানো আপনাকে অতিরিক্ত কাজের সময়ে খিটখিটে মেজাজ থেকে দূরে রাখবে। এটা এমনই ধরনের ব্যয়াম যেটা প্রয়োজন মতো সক্রিয় চিন্তাভাবনা জাগ্রত করে এবং আপনার অহেতুক চিন্তাগুলোকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ করে দেয়। আপনার কাছে এটা নিছক মেডিটেশন করার মতো শোনালেও এটা সত্যিই কার্যকরী। মানসিক চাপ দূর করে নিজের কাছে ভালো কিছু প্রত্যাশা করতে নিয়মিত দৌড়ানোর বিকল্প নেই।
মৌলিক আত্মরক্ষা কৌশল বা মার্শাল আর্ট
আপনি যদি কারাতে, জুডো, কেন্দু বা মার্শাল আর্টের মতো কিছুর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকেন তাহলে বলাবাহুল্য যে আপনি দৈনন্দিন কার্যকলাপে অবশ্যই ভালো কিছু রেখেছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, মার্শাল আর্ট শারীরিক শক্তি বৃদ্ধিসহ মানুষিক হতাশা দূর করতে সক্ষম। যেটা আপনাকে সারাদিন চনচনে মেজাজে রাখবে এবং করে তুলবে আত্মপ্রত্যয়ী।
অফিসে আড়মোড়া ভেঙে ক্লান্ত পেশিগুলোকে আরাম দিন
কাজের ফাঁকে একটু বিরতি নিয়ে মনটাকে শিথিল করুন। বিশেষজ্ঞরা জোর গলায় বলেন যে, আপনার অফিসের নতুন কাজগুলো আপনাকে প্রচন্ড মানসিক চাপের ভেতর রাখছে এবং আপনার বস আপনার কাছে একপ্রকার চ্যলেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে। আপনি আপনার সহকর্মীদের বন্ধুরুপী শত্রু ভেবে ফেলছেন। অর্থাৎ একনাগাড়ে কাজ করার ফলে অতিরিক্ত মানসিক চাপ আপনাকে হতাশাগ্রস্ত করে ফেলেছে। কিন্তু তার মানে এটা নয় যে, এখান থেকে পরিত্রাণের উপায় নেই। গুটিকয়েক প্রক্রিয়া অনুসরণ করলেই এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।
কাজের ফাঁকে ফাঁকে কিছুটা বিরতি নিন। চেয়ারে বসে আড়মোড়া কাটুন। মাথার পেছনে হাত রেখে পা সোজা করে কাঁধের পেশিগুলোর ওপর চাপ প্রয়োগ করুন। এতে কাধের পেশিগুলোতে আরাম অনুভূত হবে। এভাবে মাথা হাটুর কাছে নিয়ে এবার পিঠের পেশিগুলোকে সক্রিয় করুন। দেখবেন মুহূর্তেই আপনার বিরক্তিভাব দূর হয়ে স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করছেন। দীর্ঘসময়ে বসে থাকলে কাধের ও পিঠের পেশিগুলো অসাড় হয়ে যায়। ফলে আপনার বিরক্তিভাব চলে আসে। এ দুইটা ব্যয়াম আপনাকে ফ্রেশনেস ফিরিয়ে আনতে যথেষ্ট সাহায্য করবে।
আত্মবিশ্বাস বাড়াতে টিম স্পোর্টস
অন্যদের সঙ্গে অনুশীলন বিশেষ করে দলগত অনুশীলন পারস্পরিক আস্থা ও ইতিবাচক সম্পর্ক স্থাপনে যথেষ্ট ফলপ্রসু। নানা ধরনের মানসিক চাপ কমাতে নিজেকে সামাজিকীকরণ এক অন্যতম উপায়। যেটা একইসঙ্গে আপনাকে মানসিক প্রশান্তি দেওয়া সহ আপনার দুশ্চিন্তা কমাতে সাহায্য করবে। তাই এখনি দলগত কোনো খেলা বা সামজিক কাজে নিজেকে যুক্ত করুন। হতে পারে সেটা বস্কেটবল, ফুটবল, ভলিবল খেলাসহ স্বেচ্ছাসেবক দলের সঙ্গে যেকোনো সামাজিক কাজের মাধ্যমে। এটা আপনাকে আত্মবিশ্বাসী ও নিজেকে নতুন করে জানতে সাহায্য করবে।
শরীর ও মনের অতি উপকারী যোগব্যায়াম
এটা কোনোভাবেই এড়ানো যাবে না যে, যোগব্যায়াম সত্যিকার অর্থেই দেহ এবং মনের জন্য যথেষ্ট উপকারী। এটা শুধুমাত্র আপনার শরীরকেই ঠিক রাখবেনা সেইসঙ্গে আপনার ক্লান্ত পেশিগুলোতে যোগাবে প্রশান্তির অনুভূতি। যোগব্যায়াম শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীর ও মনের যোগসূত্র স্থাপন করে থাকে। তাই এখনি মাদুর বা পাটি বিছিয়ে লেগে পড়ুন যোগব্যায়ামে এবং দূর করুন আপনার অহেতুক উদ্বেগ ও হতাশাগুলো।
তথ্যসূত্র : বিজনেস ইনসাইডার