নিউজ ডেস্ক:পাহারাদারদের ভয় দেখিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মাথাভাঙ্গা ব্রিজ দিয়ে আবারও ভারী যানবাহান পারাপারের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সাতটি ভারী যানবাহন ফিরিয়ে দেওয়া হলেও স্থানীয় লোকজনসহ পাহারাদারদের অভিযোগ, প্রতিদিনই সন্ধ্যার পর যানবাহনগুলো পার করছে একটি চক্র। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি যেকোনো সময় ধসে পড়ে বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে, পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর ভারী যানবাহন পারাপার কম হলেও কয়েকদিন যেতে না যেতেই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চকলা, বুলেট, ছানোয়ার ও বিদ্যুৎ। সংশ্লিষ্ট চক্রটির বিরুদ্ধে প্রশাসন দ্রুতই ব্যবস্থা নেবে এমনটিই আশা করছেন ভুক্তভোগীরা।
জানা যায়, ১৯৬২ সালে মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর নির্মিত হয় ১৪০ মিটার দৈর্ঘের ব্রিজ। দীর্ঘ কয়েক যুগ পর গত ২০১৫ সালের ২৫ অক্টোবর ব্রিজটির মাঝের অংশ ধসে পড়ে। ধসে যাওয়া অংশ ইস্পাতের পাটাতন দিয়ে মেরামত করা হয়। ওই অবস্থায় চলাচলের একপর্যায়ে ২০১৮ সালের ৩ জানুয়ারি ব্রিজটির একটি অংশ আবারও ধসে পড়ে। পরে প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রিজটির নিচে প্রটেকশন পিলার বসিয়ে উভয় পাশে ‘ঝুঁকিপূর্ণ সেতু’ সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে ব্রিজ দিয়ে ১০ টনের অধিক ভারী যানবাহন চলাচল নিষেধ করে দেওয়া হয়। ভারী যানবাহন চলাচল ঠেকাতে ব্রিজটির উভয়পাশে নিজস্ব জনবল দিয়ে পাহারার ব্যবস্থা করে সওজ কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে দুজন করে তিনটি দল পালাক্রমে পাহারা দিচ্ছে ব্রিজটি। তবে পাহারাদারদের ভয়ভীতি ও হুমকি-ধামকি দেখিয়ে বেপরোয়া চক্রটি হরহামেশা ভারী যানবাহনগুলো পারাপার করছে বলে অভিযোগ ওঠে।
দৌলাতদিয়াড় অংশের পাহারাদাররা গতকাল সন্ধ্যায় সাতটি ভারী যানবাহন ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজে উঠতে বাধা দেন। এ সময় স্থানীয় জনগণের জটলায় ব্রিজের উভয় পাশে যানযট সৃষ্টি হয়। পরে ট্রাফিক পুলিশ ও সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে যানজটমুক্ত করাসহ ভারী যানবাহনগুলো ফিরিয়ে দেয়। এ সময় ভারী যানবাহনগুলো ফিরিয়ে দিলেও অভিযোগ ওঠে একটি চক্র প্রতিদিনই বিভিন্নভাবে পাহারাদারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ভারী যানবাহনগুলো পারাপার করছে। ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ দিয়ে একটি চক্রের ভারী যানবাহন পারাপারের বিষয়ে গত কয়েকদিন আগে দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে যানবাহন পারাপার বন্ধ হয়ে যায়। তবে কয়েকদিন যেতে না যেতেই দৌলাতদিয়াড় এলাকার এই চক্রটি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাহারাদাররা অভিযোগ করেন, গতকাল সন্ধ্যার পরও ভয়ভীতি দেখিয়ে দুটি অতিরিক্ত পণ্যবাহী ট্রাক পার করে দিয়েছে এ চক্রটি। এভাবে পণ্যবাহী ভারী যানবাহন পারাপার করার কারণে ১৫ দিন আগে মাস্টাররোলে চাকরি করা উজিরপুরের মোমিন নামের একজন পাহারাদারের চাকরি চলে গেছে। যাই হোক এখন থেকে তাঁরা কোনো ভারী যানবাহন ব্রিজের ওপর উঠতে দেবেন না বলে জানান।
স্থানীয় লোকজন ও পাহারাদারেরা আরও অভিযোগ করেন, চক্রটির দৌলাতদিয়াড় অংশের নিয়ন্ত্রণ করছে দক্ষিণ পাড়ার ফকির মিয়ার ছেলে বুলেট, একই এলাকার আকুব্বরের ছেলে ছানোয়ার ও সর্দার পাড়ার কাতর মন্ডলের ছেলে চকলা এবং বড় বাজার অংশের নিয়ন্ত্রণে আছেন বিদ্যুৎ। এই চক্রটির দাপট এতটায় যে, তাঁদের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ করতেও ভয় পান স্থানীয় লোকজন। সংশ্লিষ্ট চক্রটির বিরুদ্ধে প্রশাসন দ্রুতই ব্যবস্থা নেবে, এমনটিই আশা করছেন ভুক্তভোগীরা।