নিউজ ডেস্ক:
প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনে ক্লান্ত হয়ে যায় মন। অবসাদ যেন ঘিরে ধরে। চারপাশের সব কিছুই তখন অসহ্য মনে হয়। নিজের কর্মস্থলের কলিগ, পরিবারের সদস্য কিংবা পরিচিতজনদের সঙ্গে মেজাজ নিয়ন্ত্রণে রেখে চলা কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু একটু সচেতন হলে আপানি নিজেই নিয়ন্ত্রন করতে পারেন আপনার শরীর ও মন। প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় মন ভালো করা খাবার গুলো রাখলেই হাসি মুখে কেটে যেতে পারে আপনার সারা দিন।
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু খাবার যেমন অবসাদকে আরও বাড়িয়ে তোলে, তেমনই কিছু খাবার খেলে মন দ্রুতই ভালো হয়ে যায়। তাই জেনে নেয়া যাক কোন খাবারগুলো আপনার অবসাদকে দূরে করে মনকে রাখবে আনন্দিত।
ডার্ক চকোলেট:
ডার্ক চকোলেট ডার্ক চকোলেট খেলে খুব তাড়াতাড়ি মন ভালো হয়ে যায়। এটি খেলে এন্ডোমরফিন নামে এক ধরনের হরমোন নিঃসরণ হয় যা মনকে ভালো করে তোলে।
ডিম:
ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। ফলে ডিম খেলে এনার্জি অনেকটা বেড়ে যায়। পুষ্টিতে ঠাসা ডিম ক্লান্তি ও উদ্বেগকে কমাতে সাহায্য করে।
কমলার রস:
জার্মানির হোহেনহাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সমীক্ষায় দেখা যায়, আস্ত কমলা খাওয়ার চেয়ে কমলায় থাকা ভিটামিন ‘সি’-র রসের ক্যারটিনয়েড ও ফ্ল্যাভোনয়েড শরীর সহজে গ্রহণ করতে পারে৷ অর্থাৎ মন ভালো করতে কমলার তাজা রসের তুলনা নেই৷ তবে কমলা লেবুর রস পান করতে হবে চিনি বা পানি ছাড়া৷
চিকেন:
চিকেনে রয়েছে এমন উপাদান যা নার্ভে পৌঁছে মনকে দ্রুতই ভালো করে দিতে পারে। নিয়মিত চিকেন খেলে অবসাদের মাত্রা অনেক কমে যায়।
টম্যাটো:
টম্যাটোতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে লাইকোপেন যা মুডকে ভালো করে তোলে। এছাড়াও ফোলেট, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রনও রয়েছে টম্যাটোতে যা মন ভালো করার অনুঘটক।
দই:
দই দইয়ের মধ্যে থাকা ক্যালশিয়াম দুশ্চিন্তা ও ক্লান্তি কমাতে সাহায্য করে। চট করে মনকে ভালো করতেও দই সমান পারদর্শী।
দুধ:
দুধে রয়েছে ট্রাইপটোফ্যান যা শরীরে সেরেটনিরের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। তাছাড়া দুধে রয়েছে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি। এটি দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
মধু:
মধু বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, মন ভালো রাখতে মধুর চেয়ে ভালো জিনিস আর নেই। মধুর মিষ্টত্ব মনকে যেমন নিমেষেই ভালো করে দেয়, তেমনি উদ্বেগ ও অবসাদ কমাতেও সাহায্য করে।
ফল ও শাকসবজি:
স্বাস্থ্যকর তো অবশ্যই। পাশাপাশি ফল ও সবজি মন ভালো রাখতেও সাহায্য করে। ফলের তৈরি পাই, স্মুদি, আইসক্রিম ইত্যাদি মানসিক অবস্থা উন্নতির জন্য দারুণ উপকারী। পুষ্টিগুণে ভরপুর সবজিও মানসিক অবস্থা ভালো করতে সাহায্য করে। ফল ও সবজিতে রয়েছে ফাইটোকেমিকল, ভিটামিন সি এবং প্রোটিন, যা মন ভালো করতে সাহায্য করে।
মাছ:
মাংসের তুলনায় বরাবরই মাছ স্বাস্থ্যকর খাবার। এতে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড যা হতাশা দূর করতে সাহায্য করে। দ্য আর্কাইভস অফ জেনারেল সাইকিয়াট্রি’র এক গবেষণায় জানা যায়, যারা প্রতিদিন অন্তত এক গ্রাম মাছের তেল খেয়ে থাকেন তাদের মধ্যে হতাশা, ঘুমের সমস্যা, যৌন সমস্যা ইত্যাদি হওয়ার সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ কমে যায়।
ওটস:
ওটস খেলেও মন আপনা থেকেই ভালো হয়ে যায়। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে ও মনকে ধীরে ধীরে ভালো করে তোলে।
মরিচ:
মরিচ খাওয়ার পর মজার ঝাল স্বাদটা যখন জীবে লাগে, তখনই এন্ডোরফিন, অর্থাৎ আরো একটি সুখ হরমোন শরীরে ছড়িয়ে যায়৷ তাই কেউ যদি প্রচণ্ড ঝাল দিয়ে স্প্যাগেটি বা নুডলস রান্না করে খান, তাহলে তাঁর আনন্দের মাত্রা বেড়ে হতে পারে দ্বিগুণ!