নিজস্ব প্রতিবেদক :
চুয়াডাঙ্গা জীবননগরে রাতের আধারে মেসার্স মা ট্রেডার্স নামের একটি ভুষিমালের আড়ৎ অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ উঠে গত সোমবার দিবাগত রাত একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
গতকাল মঙ্গলবার পাঁচজন সাংবাদিকসহ ৬৩ জনের নাম উল্লেখ করে জীবননগর থানায় অভিযোগ করেছেন আড়ৎ মালিক যুবদল নেতা আহসান কবির সুমন।
এদিকে, মামলায় মনগড়াভাবে সাংবাদিকদের নাম দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করায় সাংবাদিক মহলে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
থানায় করা অভিযোগে সাবেক পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবু মো. আব্দুল লতিফ অমল, পৌর যুবলীগের সভাপতি শাহ আলম শরিফুল ইসলাম ছোট বাবু, মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন খান, জীবননগর কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি অনিক, বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের প্রধান, সাধারণ সম্পাদক শহিদুজ্জমান বিপ্লব, জীবননগর পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসানুর রহমান তনু, মজিবুর রহমান, আতিয়ার রহমান, ওয়াসিম রাজা, ফরহাদ হোসেন, ফরহাদ হোসেন, ফারুক হোসেন, রকু মিয়া, আবুল কাশেমসহ ৬৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
ওই মামলায় সাংবাদিক এস কে লিটন, মিঠুন মাহমুদ, এইচ এম হাকিম, মুকুল, জামাল হোসেনসহ মোট পাঁচ সাংবাদিককে মনগড়াভাবে আসামি করে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে সাংবাদিক মহলের নেতারা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘটনার সময় পাঁচজন সাংবাদিকের মধ্যে এস কে লিটন ঢাকাতে অবস্থান করছিলেন, চুয়াডাঙ্গায় ছিলেন এইচ এম হাকিম, মিঠুন মাহমুদ ঢাকা থেকে ঘটনার রাত চারটায় চুয়াডাঙ্গায় পৌঁছান এবং সকালে তিনি জীবননগর নিজ বাড়িতে যান। এছাড়া মুকুল ও জামাল হোসেন খোকন ঢাকাতে অবস্থান করছেন।
সাংবাদিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে তাহলে এই সাংবাদিকেরা কীভাবে তার গোডাউনে আগুন দিলেন? তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং ওই এলাকায় সকল সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে প্রকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। এছাড়াও মিথ্যা মামলায় সাংবাদিকদের ফাঁসানোর চেষ্টা করায় গোডাউন মালিক আহসান কবির সুমনকেও আইনের আওতায় আনার দাবি করেন।
এদিকে, থানায় করা অভিযোগে আহসান কবির সুমন উল্লেখ করেন, তিনি রোববার রাত ১০টার দিকে আড়ৎ বন্ধ করে বাড়িতে যান। রাত একটার দিকে লাল্টু মিয়া নামের একজন ফোন করে জানান আসামিরা তার আড়তে প্রবেশ করে বস্তায় থাকা ভুট্টার বীজ লুট করে। এবং পেট্রোল দিয়ে গোডাউনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়া আসামিরা চলে যাওয়ার সময় পরপর ৩টি ককটেল বিস্ফোরণ করে। এতে তার ৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এ বিষয়ে জীবননগর সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আতিয়ার রহমান বলেন, ‘সাংবাদিকদের কোনো দল নেই। সাংবাদিকদের কাজ সংবাদ সংগ্রহ করে প্রকাশ করা। সে ক্ষেত্রে সকল নেতা-কর্মীর সাথে একটি সুসম্পর্ক তৈরি হয়। সেই সম্পর্কের ইস্যু ধরে বিবেচনা করে দফায় দফায় সাংবাদিকদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করবে, এটা কখনও মেনে নেওয়া হবে না। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিলেই প্রতিহত করতে হবে। জীবননগর সাংবাদিক মহল এর প্রতিবাদ জানায়।
এ বিষয়ে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মামুন হোসেন বিশ্বাস বলেন, ‘খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে থানার একটি দল পরিদর্শনে গিয়েছিল।
প্রাথমিক তদন্তে আড়তের মালামাল আগুনে পুড়ে যাওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। যেখানে কয়েকজন সাংবাদিকসহ ৬৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোনো ব্যক্তির নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা যাবে না।’